Total Pageviews

Tuesday, September 10, 2019

Volpone - (The Fox) - Ben Jonson - Translation in Bangla - Act - 3 - Scene -7-8-9

Volpone - (The Fox) - Ben Jonson - Translation in Bangla - Act - 3 - Scene -7-8-9


Previous Part - Volpone - Translation in Bangla - Act - 3 - Scene -1-2-3-4-5-6

Volpone (The Fox) - Ben Jonson - Translation in Bangla - Act - 3 - Scene -7-8-9


তৃতীয় অঙ্ক সপ্তম দৃশ্য

(মসকা, করভিনো, এবং সিলিয়ার প্রবেশ)।
মসকাঃ (করভিনোর প্রতি) আমার মরণ হোক। আপনি খুব তাড়াতাড়ি চলে এসেছেন। আপনি এ কাজ করে কি বোঝাতে চাইছেন? যতোক্ষণ না আমি খবর পাঠাই, ততোক্ষণ কি আপনাকে আমি অপেক্ষা করতে বলিনি?
করভিনোঃ হ্যা, কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছিলাম যদি তুমি আমাকে খবর পাঠাতে ভুলে যাও আর অন্যরা সেই সুযোগে যদি আগেই কিছু করে বসে আর আমাদের কাজ পণ্ড করে দেয়।
মসকাঃ পণ্ড করবে? কোনো মানুষ কি কখনো অসতী স্ত্রীর স্বামী হবার জন্য এমন তাড়াহুড়া করে? একজন সভাসদ এতো তাড়াতাড়ি উচ্চপদের জন্য অনুরোধ করে না। বেশ, এখন আর কিছু করার নেই। আপনি এখানে অপেক্ষা করুন। আমি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো।
করভিনোঃ সিলিয়া, তুমি কোথায়? তুমি কি জানো কেন তোমাকে আমি এখানে এনেছি?
সিলিয়াঃ না, আমি শুধু তাই জানি যা আপনি আগে আমাকে বলেছেন।
করভিনোঃ এখন তোমাকে আমি সব বলবো। শোনো তবে। (তারা কথা বলতে লাগলো।)।
 (মসকা বোনারিওর কাছে ফিরে গেল)।
মসকাঃ স্যার, আপনার বাবা খবর পাঠিয়েছেন যে তার আসতে আধঘণ্টা দেরী হবে। তাই যদি আপনি কিছু মনে না করেন, তাহলে ওই গ্যালারিতে আপনি ঘোরাফেরা করতে পারেন । ওপরের শেষ প্রান্তে আপনি সময় কাটাবার জন্য কিছু বই পাবেন। আমি লক্ষ্য রাখবো কেউ যেন আপনাকে বিরক্ত না করে, স্যার।
বোনারিওঃ আচ্ছা, আমি সেখানেই অপেক্ষা করবো। (জনান্তিকে) এই লোকের সততায় আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তিনি হেঁটে পাশে চলে গেলেন এবং পড়তে শুরু করলেন)।
মসকাঃ ওই দূরত্বে তিনি এখান থেকে যথেষ্ট দূরে আছেন। করভিনোর সঙ্গে আমার কথাবার্তা তিনি শুনতে পাবেন না। আর, তার বাবার জন্যে কিছুক্ষণের জন্য তাকে আমি দূরে সরিয়ে রাখতে পারবো।
করভিনোঃ (সিলিয়ার প্রতি) না, এখন আর ফিরে যাবার কোনো উপায় নেই, আর তোমার মন ঠিক করো। এই হলো আমার সিদ্ধান্ত। তুমি নিশ্চয়ই আমার কথা শুনবে। আমি তোমাকে আগে থেকে এ ব্যাপারে কিছু জানতে দেইনি, যে সব ওজর আর কৌশল খাটিয়ে তুমি আমার ইচ্ছের সঙ্গে বিরোধিতা করতে তা এড়াবার জন্য।
সিলিয়াঃ স্যার, আমার পবিত্রতার ব্যাপারে এইসব অস্বাভাবিক পরীক্ষা নেবার ভান করার জন্য আমি অনুরোধ করছি। যদি আপনি আমার সতীত্ব সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ করেন, আপনি তো আমাকে চিরকালের জন্য আবদ্ধ করে রাখতে পারেন, একটা অন্ধকার ঘরে আমাকে আটকে রাখতে পারেন; যদি আমি আপনার বিশ্বাস অর্জন করতে না পারি, তাহলে আমাকে এমন জায়গায় রাখুন যেখানে থাকলে আপনার ভয় দূর হবে।
করভিনোঃ বিশ্বাস করো, তোমার সতীত্ব পরীক্ষা করার কোনো ইচ্ছেই নেই আমার। আমি যা বলেছি, তাই করবো। এখনো পর্যন্ত আমি উন্মাদম হইনি, অসতী পত্মীর স্বামী হবার জন্য আমি ভীত নই। বুঝতে পারছ? প্রতিরোধ করে লাভ নেই, প্রমাণ করো যে তুমি আমার প্রতি বাধ্য আর সত্যিই তুমি এমন স্ত্রী যে তার স্বামীর সঙ্গে সহযোগিতা করে।
সিলিয়াঃ ওহ খোদা।
করভিনোঃ আমি যা বলেছি, তা করো।
সিলিয়াঃ যা বলা হয়েছে এবং যা করা হয়েছে, সে সব কিছুর লক্ষ্য কি এটাই ছিলো?
করভিনোঃ আমি কেন এ কাজ করতে যাচ্ছি তার কারণ তোমাকে আমি বলেছি। আমি তোমাকে বলেছি-চিকিৎসকরা ভলপোনির চিকিৎসার জন্য কি নির্দেশ দিয়েছেন; আমি কতোটা পাবো; আমার অর্থনৈতিক প্রতিজ্ঞা কি; কতোটা পুঁজি আমার রয়েছে এবং আমার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য এই উত্তরাধিকার পাওয়াটা কতোটা দরকার। এই কারণে, যদি তুমি আমার প্রতি অনুরক্ত হও এবং যদি তুমি আমার হও, তাহলে আমার কথা শোন, আর আমাকে সহযোগিতা করো।
সিলিয়াঃ আপনি কি আমার কাছ থেকে এটা আশা করেন যে, আমি আপনার বাণিজ্যিক প্রচেষ্টাকে আপনার সম্মানের ওপরে স্থান দেই?
করভিনোঃ সম্মান! ছাড়ো, সম্মান হল শুধুমাত্র একটি শব্দ। প্রকৃতিতে সম্মান বলে কোনো কিছু নেই। বোকাদের ভীত করার জন্যই শুধু এই শব্দটি উদ্ভাবিত হয়েছিল। আমার সোনা কি তার মূল্য হারাবে যদি এটা কেউ স্পর্শ করে? আমার বস্ত্র কি তার মূল্য হারাবে যদি কেউ সেটার দিকে তাকায়? ওই বৃদ্ধ ব্যক্তির পাশে শুয়ে কি তুমি তোমার সম্মান হারাবে? তিনি হচ্ছেন একজন বৃদ্ধ, দুর্বল বেচারা যিনি তার অঙ্গের এবং পেশীর ব্যবহারের শক্তি হারিয়েছেন এবং যিনি অন্যদের সাহায্যে খাদ্য গ্রহণ করেন। তিনি শুধু হাঁ করে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকবেন যদি তুমি তার মুখে কিছু গরম তরল পদার্থ ঢেলে দিয়ে তার মাড়ি পুড়িয়ে ফেল। তিনি হচ্ছেন কেবল মাত্র একটি কণ্ঠস্বর, একটি ছায়া। কেমন করে তার মতো একজন মানুষ তোমাকে আঘাত করবেন?
সিলিয়াঃ ঈশ্বর! কী অশুভ শক্তি আমার স্বামীর দেহে প্রবেশ করেছে।
করভিনোঃ আর তোমার সম্মানের কথা বলছো? তুমি এ ব্যাপারটা নিয়ে অযথাই বাড়াবাড়ি করছ তুমি কি ভাবছো যে আমি মানুষের কাছে গিয়ে এ ব্যাপারে কিছু বলব? আমি কি গণ স্কোয়ারে গিয়ে এ ব্যাপারটি ঘোষণা করব? এ ব্যাপারে ভলপোনি ছাড়া আর কেউই কিছু জানবেন না, যিনি এ ব্যাপারে কিছু বলার অবস্থায় নেই, এবং এই লোক মসকা যার মুখ বন্ধ করতে পারি টাকা দিয়ে। তুমিই হচ্ছ একমাত্র অন্য ব্যক্তি যে এটা জানবে। যদি তুমি নিজেই এটা বলতে চাও, বলতে পারো। আমি জানিনা আর কে আছে যে এ ব্যাপারে কিছু জানতে পারে।
সিলিয়াঃ তাহলে কি ঈশ্বর এবং সন্তরা কিছু নয়? এ ব্যাপারে কি তিনি তার চোখ বন্ধ করে রাখছেন, অথবা তারা কি এতোটাই বোকা যে তারা এ ব্যাপারে অজ্ঞ থাকবেন?
করভিনোঃ কিভাবে?
সিলিয়াঃ প্রিয় স্যার, আপনার এখনো উচিত আপনার সম্মানের ওপর কলঙ্কচিহ্ন পড়ার জন্য মনস্তাপ করা, আপনার উচিত সন্তদের উদাহরণ অনুসরণ করা। তারা যে প্রতিটি পাপ কাজের জন্য ভয়ংকর ঘৃণা অনুভব করতেন সে সম্পর্কে আপনার চিন্তা করা উচিত।
করভিনোঃ আমি মেনে নিচ্ছি। কিন্তু যদি আমি এটিকে পাপ বলে মনে করতাম, আমি তোমাকে জোর করতাম না। এটা পাপ হত যদি আমি তোমাকে কিছু তরুণ ফরাসীর হাতে ছেড়ে দিতাম বা কিছু আবেগময় তাসকাণদের হাতে যারা কবি আরেটাইনের কামসর্বস্ব কবিতা পড়েছে এবং অশ্লীল চিত্রের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে, যে কিনা যৌনাচারের সমস্ত সূক্ষ্ম পদ্ধতি এবং কৌশলের সঙ্গে পরিচিত। এবং ইন্দ্রিয়গত আনন্দের শিল্পে যে বিশেষজ্ঞ বলে দাবী করতে পারে। কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক তার উল্টো। আমি তোমাকে যা করতে বলছি তা হল পবিত্র কাজ, তার যন্ত্রণা থেকে তাকে নিরাময় করার দয়া দেখাবে এবং তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিশ্চিত করে আমাদের জন্য ভাল লাভ বয়ে আনবে।
সিলিয়াঃ ওহ্ ঈশ্বর! আমার স্বামী কি এতোটাই বদলে যেতে পারেন?
ভলপোনিঃ (মসকাকে) তুমি আমার গর্ব, মসকা, আর আমি তোমাকে নিয়ে গর্ব অনুভব করছি। তুমি আমার আনন্দের উপায়, সন্তুষ্টির উপায়, সুখের উপায়। যাও, আর তাদের নিয়ে এসো।
মসকাঃ (করভিনোর কাছে গিয়ে) দয়া করে কাছে আসুন, স্যার।
করভিনোঃ ( তার স্ত্রীর প্রতি) এসো, তুমি কি এখনো প্রতিরোধ করছো? আমাকে অমান্য না করার জন্য তোমাকে সাবধান করে দিচ্ছি, আমি সেই আলোর নামে শপথ করছি-
মসকাঃ (ভলপোনিকে) স্যার, সিনর করভিনো এসেছেন, তিনি আপনাকে দেখতে এসেছেন।
ভলপোনিঃ ওহ।
মসকাঃ আপনার অসুস্থতার নিরাময়ের জন্য কিছুক্ষণ আগে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে চিকিৎসকরা যে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন সেটা জানতে পেরে তিনি তার স্ত্রীকে আপনার কাছে নিবেদন করেছেন, বরং বলা যেতে পারে, স্যার, আপনার কাছে তাকে বিক্রি করতে এনেছেন।
করভিনোঃ ধন্যবাদ, প্রিয় মসকা।
মসকাঃ (ভলপোনিকে)-তিনি তার নিজের ইচ্ছেতেই এসেছেন, তাকে ডাকা হয়নি বা অনুরোধও করা হয়নি-
করভিনোঃ তা ঠিক।।
মসকাঃ সত্যি বলতে কি আপনার প্রতি তার তীব্র ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে তিনি ভেনিসের অতুলনীয় সুন্দরী মহিরা তার অত্যন্ত সুশীলা এবং সুন্দরী স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন।
করভিনোঃ আপনি যথার্থতার সঙ্গেই ব্যাপারটি উপস্থাপন করছেন।
মসকাঃ তিনি আপনার স্বস্তির উৎস হবেন এবং আপনার জীবন রক্ষা করবেন।
ভলপোনিঃ হায়, আমি ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছি। অনুরোধ করছি, আমার জন্য তার উদ্বেগের জন্য এবং তার দেরী না করে তার স্বীকে নিয়ে আসার জন্য তাকে ধন্যবাদ দাও। কিন্তু আমার জীবনের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, ঈশ্বরের ইচ্ছের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রচেষ্টা কোনো ফল বয়ে আনবে না। আমার জীবনের বাঁচাবার চেষ্টা একখন্ড পাথরের কাছে আগুন প্রয়োগ করার মতই অসার হবে। (কাশি)। উহ। উহ। উহ। উহ। এটা জীর্ণ পাতাকে আবার জন্মানোর চেষ্টা করার মতোই হবে। তবুও, আমি তার সদিচ্ছাকে অভিবাদন জানাই, আর তুমি তাকে বলে দাও তার জন্য আমি কি করেছি। নিঃসন্দেহে, আমার আর কোনো আশা নেই। আমার আত্মার জন্য তাকে প্রার্থনা করতে বলো, এবং আমার মৃত্যুর পরে যে সম্পত্তির উত্তরাধিকার তিনি হবেন তা যেন শ্রদ্ধার সঙ্গে ব্যবহার করেন একথাও বলো।
মসকাঃ (করভিনোকে)-স্যার, আপনি কি শুনেছেন? আপনার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তার কাছে যান।
করভিনোঃ (স্ত্রীকে)-ঈশ্বরের দোহাই। তুমি কি এভাবেই বাধা দিতে থাকবে? এসো, আমি অনুরোধ করছি, এসো। তুমি দেখছ, এটা কিছুই না সিলিয়া। আমার হাতের নামে শপথ করে বলছি যে আমি এখন ভীষণ হয়ে উঠব যদি তুমি আমার কথা না শোনো। এসো, এটা করো, আমি বলছি।
সিলিয়াঃ প্রভু, এর চেয়ে আপনি আমাকে হত্যা করুন। আমি বিষ পান করব, জলন্ত আগুন ভক্ষণ করব, যে কোনো কিছুই করব, কিন্তু এ কাজ করতে পারব না।
করভিনোঃ মরো। তোমার চুলের মুঠি ধরে টানব এবং বাড়ি নিয়ে যাব এখান থেকে টেনে। আমি রাস্তায় ঘোষণা করব যে তুমি একজন বারবণিতা। আমি তোমার কান পর্যন্ত তোমার মুখ চিরে ফেলব, আর তোমার নাক ফালি ফালি করে কাটব যেমন করে কাঁচা মাছ কাটা হয়। আমাকে বাধ্য করোনা, এসো, মেনে নাও। তোমাকে মেরে ফেলার কোনো ইচ্ছে নেই আমার । ঈশ্বরের দোহাই । আমি কিছু দাস কিনব যাদেরকে আমি মেরে ফেলব, তোমাকে জীবিত রেখে সঙ্গে বেঁধে রাখব আর আমার জানালার বাইরে তোমাকে ঝুলিয়ে রাখব। কিছু ভয়ংকর অপরাধের কথা উদ্ভাবন করে সেসব কথা বড় অক্ষরে নাইট্রিক এসিড আর জ্বলন্ত ক্ষয়কর পদার্থ দ্বারা আমি তোমার বুকের ওপরে লিখে দেব। তোমার একগুঁয়ে প্রতিরোধের জন্য এটাই হবে তোমার শাস্তি। এখন, আমার রক্তের নামে আমি শপথ করছি, তোমার আচরণের জন্য যা এখন ক্রুদ্ধ হয়ে আছে, আমি যা বলেছি বাস্তবেও আমি তাই করব।
সিলিয়াঃ স্যার, আপনার যা খুশি আপনি তাই করতে পারেন। আমি আপনার হাতে শহীদের মত মৃত্যুবরণ করব।
করভিনোঃ এ ব্যাপারে জেদ করে না। তোমার কাছ থেকে আমি এমন ব্যবহার পেতে পারি না। ভেবে দেখ, কে তোমাকে এই অনুরোধ করছে। লক্ষ্মী, তোমাকে আমি অনুরোধ করছি। বিশ্বাস করো আমাকে, তুমি পাবে রত্ম, চমৎকার লম্বা পোশাক, যে কোনো কিছু যেসব সম্পর্কে তুমি ভাবো আর যা তুমি চাইবে। আমার অনুরোধ। শুধু একবার এখন। না? তুমি তা করবে না? বেশ, তুমি যে আচরণ করছ, তা আমি ভুলব না। তুমি কি এইভাবে অপমানিত করবে? তুমি কি আমার ক্ষতি ডেকে আনতে চাও?
মসকাঃ না শান্ত ভভদ্রমহোদয়া, আর জেদ ধরে থাকবেন না। মেনে নিন।
করভিনোঃ না, না। সে এক মুহূর্ত অপেক্ষা করছে। ঈশ্বরের মূল্যবান রক্তের দোহাই, এটা তার পক্ষে খুবই নীচতা, এটা খুবই জঘন্য আচরণ, আর তুমি- 
মসকাঃ না, প্রিয় স্যার, তার প্রতি কঠোর হবেন না।
করভিনোঃ  (স্ত্রীকে) তুমি একটি আস্ত পঙ্গপাল-স্বর্গের নামে বলছি, একটি পঙ্গপাল। বারবণিতা, কুমীর, তুমি তোমার অশ্রুকে সবসময় প্রস্তুত করে রাখো, সেই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করে থাকো যখন তাদেরকে প্রবাহিত হতে বলবে।
মসকাঃ তাকে বকবেন না, স্যার, আপনাকে অনুরোধ করছি। সে ব্যাপারটা নিয়ে আরেকটু ভাবুক।
সিলিয়াঃ আমার ইচ্ছে হচ্ছে আমি আমার জীবন দিয়ে আপনাকে সন্তুষ্ট করি।
করভিনোঃ ঈশ্বরের দোহাই। যদি সে শুধুমাত্র কথা বলে বৃদ্ধ লোকটির সঙ্গে এবং তার চোখে আমার সম্মান বজায় রাখে, তাহলেও হয়। কিন্তু মনে হচ্ছে সে যেন বিদ্বেষপূর্ণভাবে আমার সম্পূর্ণ ধ্বংস ডেকে আনার চেষ্টা করছে
মসকাঃ হ্যা, এখন আপনি তার হাতেই আপনার সম্পূর্ণ ভবিষ্যৎ ন্যস্ত করেছেন। কেন এটা সত্যিই তার শালীনতা যা তাকে নিবৃত্ত করছে। আমি অবশ্যই তাকে দোষ দেব না। যদি আপনি এখানে অনুপস্থিত থাকতেন, তিনি হয়তো আরো সহজ হতে পারতেন। আমি এটা জানি, এবং তার পক্ষে আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি। কোনো মহিলাই তার স্বামীর উপস্থিতিতে এমন কাজ করতে পারেন না। আপনাকে অনুরোধ করছি। চলুন আমরা এখান থেকে চলে যাই, আর তাকে একা থাকতে দিই।
করভিনো : লক্ষ্মী সিলিয়া, তুমি পরিস্থিতিটাকে এখনো সামাল দিতে পার। আমি আর বেশী কিছুই বলব না। যদি তুমি আমার ইচ্ছেটা মেনে না নাও, মনে করবে তুমি শেষ হয়ে গিয়েছো। না, আমার সঙ্গে এসো না, বরং এখানেই থাকো।
(করভিনোঃ মসকার প্রস্থান)
সিলিয়াঃ ও ঈশ্বর, আর ঈশ্বরের ভালো দূতেরা! কোথায়, কোথায় গেল লজ্জাবোধ মানুষের হৃদয় ত্যাগ করে, যে মানুষ এতো সহজে তোমার সম্মান নষ্ট করতে সাহস করে, এবং তাদের নিজেদেরও সম্মান নষ্ট করতে সাহস করে? সম্মান যা সব সময়ই জীবন মৃত্যুর প্রশ্ন, তা কিনা এখন নিকৃষ্ট জিনিসের চেয়েও কম মূল্য পাচ্ছে? আর অর্থগত লাভের জন্য শালীনতা বা লজ্জা কি মানুষের হৃদয় থেকে বিদায় নিয়েছে?
ভলপোনিঃ হ্যা, এটা করভিনো এবং তার মতো অন্যান্য অশিষ্ট মনের মানুষের ক্ষেত্রে সত্য। (তিনি তার কৌচ থেকে লাফ দিয়ে নামলেন) এইসব মানুষেরা কখনোই ভালোবাসার সত্যিকারের আশীর্বাদ লাভ করতে পারে না। নিশ্চিন্ত থাকো, সিলিয়া, যে লোক অর্থলাভের আশায় তোমাকে বিক্রী করেছে, এমনকি তা পাবার যখন কোনো নিশ্চয়তাও নেই, সে নগদ অর্থের জন্য স্বর্গেও তার স্থান বিক্রী করে দিতে পারে, যদি সে একজন বণিকের দেখা পায়। আমাকে আমার অসুস্থতা থেকে নিরাময় লাভ করতে দেখে কেন তুমি এত বিস্মিত হচ্ছো? বরং তোমার সৌন্দর্যের প্রভাবে যে অলৌকিক ঘটনা ঘটে গেল সেটাকে তোমার প্রশংসা করা উচিত। এটা তোমার অনেক বড়ো অর্জন যার ফলে শুধু এখনই নয় বরং আরো অনেক সময়েই, আমি বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করেছি এবং আজ সকালেও, তোমার জানালায় তোমাকে দেখার জন্য বক্তা হাতুড়ে সেজেছিলাম। হ্যা, তোমার ভালোবাসা পাবার পরিকল্পনা বাতিল করার আগে, আমি বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে চেষ্টা করেছি । আকাশরঙা অনন্তকালব্যাপী পরিবর্তনশলী প্রোটিয়াসকে ছাপিয়ে যেতে, অথবা অ্যাকেলাস, যিনি শিংযুক্ত ষাড়সহ বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করেছেন। এখন তোমাকে আমি অভ্যর্থনা জানাচ্ছি।
সিলিয়াঃ স্যার, আপনি কি পেতে চাইছেন?
ভলপোনিঃ না, আমার কাছ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যেও না। আমি অক্ষম-এমন ভুল ধারণা করোনা । তুমি আমাকে অক্ষম হিসেবে দেখবে না। এ মুহূর্তে আমি এতোটাই সজীব, এতোটাই উষ্ণ, এতোটাই প্রাণপ্রাচুর্যে পূর্ণ আর এতোটাই আনন্দিত যেমনটি আমি ছিলাম তখন যখন আমি তরুণ অ্যান্টিনেয়াসের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলাম, যে ছিল সম্রাট হাড়িয়ানের প্রিয় পাত্র, সেই বিখ্যাত কমেডির দৃশ্যে যা আমি পোল্যাণ্ডের রাজ হেনরী অভ ভ্যালোয়িসকে আনন্দ দেবার জন্য মঞ্চায়িত করেছিলাম। সেই ভূমিকায়, আমি সকল মহিলার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলাম। যারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তারা প্রত্যেকটি শোভন অঙ্গভঙ্গির প্রশংসা করেছিলেন, এবং আমার সাঙ্গীতিক কণ্ঠের প্রত্যেকটি সুরের প্রশংসা করেছিলেন এবং আমার প্রত্যেকটি পদক্ষেপের প্রশংসা করেছিলেন। (তিনি গান গাইলেন) এসো, আমার সিলিয়া, এসো আমরা ভালোবাসার খেলা করি কারণ এখনো আমাদের জন্য যথেষ্ট সময় আছে। আমাদের জন্য সময় সব সময়ই থাকবে না। এক সময় আমাদের আনন্দের সময় শেষ হয়ে যাবে। তাই সময়ের উপহার উপভোগ না করে নষ্ট করাটা ঠিক হবে না। যে সূর্য অস্ত গেছে সেটা আবার উদিত হতে পারে, কিন্তু আমরা যদি একবার প্রেম করার সুযোগ হারাই, তাহলে আমরা নিঃসীম অন্ধকারে পতিত হব। সুনাম আর রটনা খুব তুচ্ছ বিষয়। আমরা কি গুটিকয় চাকরের চোখকে ফাঁকি দিতে পারি না যারা আমাদের ওপর নজর রাখছে? অথবা আমরা কি তোমার স্বামীর বিশ্বস্ত কানকে পরে ভুল পথে চালিত করতে পারি না যেমন করে এখন আমরা চালাকি করে তাকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছি, ভালোবাসার আনন্দকে প্রকাশিত করে দেয়া, প্রেমের ক্ষেত্রে ধরা পড়ে যাওয়া বা কারো চোখে পড়ে যাওয়াই হচ্ছে অপরাধ।
সিলিয়াঃ বিষাক্ত কুয়াশা আমাকে ধ্বংস করুক, অথবা ভয়াবহ বজ্র আমার মুখকে আঘাত করুক এবং তার সৌন্দর্যকে ধ্বংস করে দিক যা আপনাকে প্রলুব্ধ করেছে।
ভলপোনিঃ কেন তুমি হতাশাবোধ করছো, আমার সিলিয়া? একজন নীচুমনা স্বামীর পরিবর্তে তুমি একজন যোগ্য প্রেমিক পেয়েছো আমার মাঝে। তোমার সৌভাগ্যকে ভালভাবে ব্যবহার করো আর সমস্ত আনন্দকে গোপনে উপভোগ করো। দেখো, (তার ধনরত্মের দিকে নির্দেশ করলেন), দেখো তুমি কিসের অধিকারিণী। আমি অন্যদেরকে কেবল আশা দেই। কিন্তু তোমার ক্ষেত্রে আমি সব কিছুই তোমার উদ্দেশ্যে নিবেদন করেছি এবং আমার যা কিছু আছে তার সবকিছুরই অধিকারিণী করছি তোমাকে। দেখো, এখানে রয়েছে মুক্তোর মালা, সাহসী ক্লিওপেট্রা যে সব মুক্তোকে সির্কায় ভিজিয়ে সেই তরল পান করত, এর প্রত্যেকটি মুক্তো তার চেয়েও বেশী মূল্যবান। দেখো, এখানে একটি ঘন লাল রত্ম রয়েছে যা কিনা আমাদের সেন্ট মার্কের মূর্তির চোখের দুটো রত্মের ঔজ্জ্বল্যই ম্লান করে দিতে পারে। আমার এইসব হীরকের মধ্যে একটি লোলিয়া পলিনা, রোমের শাসকের স্ত্রী কিনেছিলেন, যখন তিনি তারকার আলোর মত উজ্জ্বল হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন বিচিত্র সব রত্ম ভূষিতা হয়ে যা কিনা যুদ্ধজয়ের পুরস্কার হিসেবে যেসব প্রদেশ তার স্বামীর শাসনাধীন ছিল সেসব প্রদেশ থেকে অর্জিত হয়েছিল। এসব মূল্যবান পাথর নাওঁ এবং পরো? যদি এগুলো তুমি হারিয়ে ফেলে তাহলেও উদ্বিগ্ন হয়োনা কারণ, যদি এগুলো হারিয়ে যায়, তাহলেও আমাদের একটি কানের দুল থাকবে যা এতোই মূল্যবান যে ওসব হীরক আবারও কেনা যাবে, এবং এই সমস্ত সম্পত্ত্বিও কেনা যাবে। একটি রত্ম যার মূল্যের তুলনায় একটি উত্তরাধিকারের মূল্য আমার কাছে নগণ্য। আমরা একটি ভোজনে প্রচুর ব্যয় করব। আমাদের খাবার তারিকায় থাকবে তোতাপাখির মাথা, পাপিয়ার জিহ্বা, ময়ুরের মস্তিষ্ক এবং অস্ট্রিচ। আর, যদি ফিনিক্স পাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়, যা একই সময়ে একটিই মাত্র থাকে, আমরা আমাদের খাদ্য হিসেবে এটিকেই রান্না করব যদিও তারপর পাখিটি লুপ্ত হয়ে যায়।
সিলিয়াঃ প্রিয় স্যার, এরকম আনন্দ পেতে আগ্রহী মনকে এসব জিনিস আকৃষ্ট করতে পারে, কিন্তু আমি এইসব ইন্দ্রিয়গত আকর্ষণের ফাঁদে পড়ব না, কারণ আমার নিষ্কলুষতাকে আমি মূল্যবান বলে মনে করি, আনন্দিত হবার পক্ষে যথেষ্ট বলে মনে করি । যদি একবার আমি আমার পবিত্রতা হারিয়ে ফেলি, তাহলে আমার হারাবাব আর কিছুই থাকবে না। যদি আপনার বিবেক বলে কিছু থাকে---
ভলপোনিঃ বিবেক হচ্ছে এমনই গুণ যা কেবলমাত্র দুর্ভাগা দরিদ্ররাই দাবী করত পারে। যদি তুমি বুদ্ধিমতী হও, আমার কথা শোনো, সিলিয়া । তুমি স্নান করবে লবঙ্গ ফুলের রস মেখে, গোলাপ এবং ভায়োলেটের সুগন্ধ মেখে, ইউনিকর্ণের দুধ মেখে ব্যাগভর্তি চিতা বাঘের মিষ্টি নিঃশ্বাস মেখে, এবং এ সব কিছু ও ক্রীটের মিষ্টি পানিয় দিয়ে তৈরী মিশ্রণ মেখে । আমাদের পানীয় তৈরী হবে স্বর্ণ এবং অম্বরের নির্যাস দিয়ে, আর আমরা সেই পানীয় পান করব যতক্ষণ না আমরা ততোটা মাতাল হয়ে যাই যখন আমরা দেখব আমাদের মাথার ওপরকার ছাদ ঘুরছে তো ঘুরছেই। আর আমার বামন নাচবে, আমার খোজা গান গাইবে, আমার ভাঁড় তা চমৎকার প্রদর্শনী সমাপ্ত করবে, যখন আমরা বিভিন্ন বেশে ওভিডের মেটামরফসিসে বর্ণিত কাহিনীগুলো অভিনয় করব। তুমি ইউরোপার বেশে আবির্ভূত হবে আর আমি জোভের বেশে যখন তিনি ইউরোপার জন্য তার আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করার জন্য ষাঁড়ের রূপ ধারণ করেছিলেন, সেভাবে আবির্ভূত হব। তারপর আমি মারস এর রূপ পরিগ্রহ করে আবির্ভূত হবো, যিনি হচ্ছেন যুদ্ধের দেবতা, আর তুমি হবে আমার ভেনাস, সৌন্দর্যের দেবী। একইভাবে, আমরা অন্যরূপগুলোও ধারণ করব, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা সবগুলো কাহিনী অভিনয় করে শেষ করব আর ক্লান্ত হয়ে পড়ব। তারপর আমি তোমাকে আধুনিক মহিলার বেশে দেখতে চাইবো, ফ্রান্সের উজ্জ্বল রমণীদের পোশাকে, টাসকেনির সুন্দরী মহিলার মত, বা স্পেনের গর্বিত সুন্দরীর মত । আবার, তুমি পারস্যদেশের শাহের স্ত্রীর বেশে আবির্ভূত হবে, অথবা তুরস্কের সুলতানের প্রেমিকার বেশে, আর বৈচিত্র্য বাড়াবার জন্যে তুমি আমাদের একজন অসতী-সভাসুন্দরী হিসেবে আবির্ভূত হবে, বা আবেগাকুল নিগ্রো রমণী হিসেবে বা শীতল রুশ রমণী হিসেবে। আর আমিও সমান সংখ্যক বেশে তোমার সঙ্গে মিলিত হব, তাহলে আমরা ভ্রমণকারী মনকে বিভিন্ন দেহে প্রবিষ্ট করাতে পারব আর এভাবে আমাদের আনন্দে আরো মাত্রা যোগ করতে পারব। (গান গাইলেন)-আমরা সব কিছু এমনভাবে করবো যে তদন্তকারীরা জানতে পারবে না কিভাবে তারা আমাদের প্রবহমান আনন্দকে বর্ণনা করবে, আর ঈর্ষাকাতররা আমাদের অসংখ্য এবং বিচিত্র আনন্দ দেখে কাতর হবে।
সিলিয়াঃ যদি আপনার এমন কান থাকে যা ভেদ্য, বা চোখ থাকে যা খোলে, বা হৃদয় থাকে যা আন্দোলিত করা যায়, বা এমন কোনো অঙ্গ থাকে যা দাবী করতে পারে এখনো যে আপনি একজন মানুষ, যদি আপনার মধ্যে পবিত্র সেইন্টদের বা ঈশ্বরের বিন্দুমাত্র চিহ্নও থাকে, রক্ষা পাবার জন্য আমাকে দয়া করুন। যদি তা না থাকে, দয়া করুন এবং আমাকে হত্যা করুন। আপনি জানেন যে আমি এমনই একজন যাকে এখানে আনা হয়েছে একজনের চালাকির দ্বারা যার নির্লজ্জ প্রতারণার কথা আমি ভুলে যেতে চাই। যদি আমার প্রতি এটুকু দয়া করতে আপনি সদয় না হন,তবে আমি আপনার লালসা চরিতার্থ করার চেয়ে বরং ক্রুদ্ধ হতে অনুরোধ করব। ক্রোধ হচ্ছে এমন এক পাপ যা লালসার চেয়ে পৌরুষ বেশী প্রদর্শন করে। আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যাকে আপনি ভুলক্রমে আমার সৌন্দর্য বলে অভিহিত করেছেন প্রকৃতির সেই অসুখী অন্যায়কে আপনি শাস্তি দিন। আমার মুখের চামড়া তুলে ফেলুন, অথবা বিষাক্ত মলম দ্বারা একে সংক্রমিত করুন, আর এভাবে আপনার হৃদয়ে অবৈধ আবেগ জাগিয়ে তোলার জন্য একে শাস্তি দিন। এমন কিছু তরল দ্রব্য আমার হাতে ঘষুন যেন তাতে করে তা কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়ে হাড় এবং মজ্জা পর্যন্ত খেয়ে ফেলে। যে কোনো কিছুই করতে পারেন যা আমার সৌন্দর্যকে নষ্ট করবে বা বিকৃত করবে, কিন্তু আপনি আমার সম্মান নষ্ট করবেন না। যদি আপনি আমার অনুরোধ রক্ষা করেন, আমি আপনার সামনে নতজানু হব, আপনার জন্য প্রার্থনা করব, আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সহস্র ঘণ্টা প্রার্থনা করে আপনাকে এর প্রতিদান দেব স্যার। আর, আমি আপনাকে একজন মহান ব্যক্তি বলে মনে করব এবং অন্যদেরও বলব যে আপনি একজন মহান ব্যক্তি।
ভলপোনিঃ তুমি বলতে চাইছো যে আমার উচিত তোমাকে ভাবতে দেয়া যে আমি একজন অক্ষম বৃদ্ধ, রমণীর আবেগ অনুভব করতে অসমর্থ ব্যক্তি, এবং তুমি চাইছ যে অন্যদের কাছেও এভাবেই আমার বর্ণনা দেবে তুমি সে ব্যবস্থা আমি করব। তুমি ভাবতে পারতে যে আমি হার্নিয়ায় ভুগছিলাম। যে রোগে পাইলসের রাজা নেস্টরও ভুগেছিলেন আর তার ফলে সমস্ত যৌনক্ষমতা হারিয়েছিলেন। আমার সুযোগ যথাসময়ে ব্যবহার না করে আমিও বোধহয় আমার জাতির গুণগুলো হারাতে বসেছি, এবং আমি আমার জাতির জন্য অসম্মান বয়ে নিয়ে আসছি যখন তুমি ভাবছো যে ইতালীয়দের পৌরুষদীপ্ত তেজ নেই। আমার উচিত প্রথমে মিলনকার্য সম্পাদন করা, এবং কেবলমাত্র তারপরই তোমার সঙ্গে কথোপকথন করা উচিত। এখন হয় সমর্পন করো, তা না হলে আমার ইচ্ছে পূরণের জন্য আমি জোর খাটাব।
সিলিয়াঃ  ও। মহান ঈশ্বর, আমাকে বাঁচাও।
ভলপোনিঃ তোমার সব বাধাই এখন অর্থহীন (বোনারিও লাফিয়ে পড়ল সেখান থেকে যেখানে মসকা তাকে লুকিয়ে রেখেছিল)।
বোনারিওঃ থামো, রমণীর সম্মান হরণকারী শয়তান। কামুক শূকর। ভণ্ড, যে রমণীকে পরাভূত করার জন্য জোর করছো তাকে ছেড়ে দাও, তা না হলে আমি তোমাকে হত্যা করব। যদি আমি আইনকে তার শাস্তি প্রদানের কর্তব্য পালন করা থেকে বঞ্চিত করতে অনিচ্ছুক না হতাম, তাহলে আমার ক্রোধ এবং প্রতিশোধের অনুভূতির দ্বারা তাড়িত হয়ে, এই সোনার স্থূপ এবং এই টাকার স্থূপ যা তোমার পূজনীয় বস্তু তার সামনে তোমাকে বলি দেয়াই আমার কর্তব্য হত । এসো, ভদ্রমহোদয়া, এই স্থান ত্যাগ করি, এটি হলো দুর্বৃত্তের লুকোবার স্থান। কোনো কিছুকে ভয় পেয়োনা । আমাকে একজন রক্ষাকর্তা বলে ভাবতে পারো। এই লোকটির প্রাপ্য শাস্তি খুব তাড়াতাড়িই সে পাবে।
(বোনারিও এবং সিলিয়ার প্রস্থান)
ভলপোনিঃ ছাদ তুমি আমার মাথায় ভেঙ্গে পড়ো, আর ধ্বংসাবশেষের নীচে আমাকে কবর দাও। তুমি আগে আমার আশ্রয় ছিলে, এখন আমার কবর হয়ে উঠেছো। ও। আমি প্রকাশিত হয়ে পড়লাম, আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলাম ধ্বংস হয়ে গেলাম, একটি ভিক্ষুকের দ্বারা প্রতারিত হলাম, অপমানের শিকার হলাম-

তৃতীয় অঙ্ক অষ্টম দৃশ্য

(মসকাঃ ভলপোনির প্রবেশ)
মসকাঃ (আহত এবং রক্তাক্ত)-কোথায় আমি পালাব? তিনি আমার দুর্ভাগা মাথায় আঘাত করেছেন। আমাকে তিনি হীনভাবে অপমানিত করেছেন।
ভলপোনিঃ এখানে এসো। কি হয়েছে? তোমার শরীর থেকে কি রক্তপাত হচ্ছে,
মসকাঃ আমার মনে হচ্ছে-যদি লক্ষ্যভেদী তলোয়ারটা এতটাই ভদ্র হত যে তা আমার নাভি পর্যন্ত ফেড়ে ফেলতো তাহলে আমি এখনো পর্যন্ত বেঁচে থেকে আমার জীবন, আমার আশা, আমার শক্তি, আমার প্রভু, দুর্দমনীয়ভাবে আমারই তৈরী ফাদে পড়া দেখার চেয়ে মরে যেতাম।
ভলপানিঃ তোমাকে অভিশাপ।
মসকাঃ আর আমার ভুলের প্রতিও অভিশাপ, প্রভু।
ভলপোনিঃ তুমি আমার জন্য দুর্দশা বয়ে এনেছো।
মসকাঃ  আর আমি নিজেকেও দুর্দশাগ্রস্ত করে তুলেছি। প্রভু। কে ভাবতে পেরেছিল যে, বোনারিও এইভাবে সব কথা আড়ি পেতে শুনবে?
ভলপোনিঃ আমরা এখন কি করব?
মসকাঃ  আমি জানি না। যদি আমার হৃদপিণ্ড বলি দিয়ে এই দুর্ঘটনা এড়াতে পারতাম, তাহলে আমি আমার বুক থেকে তা টেনে বের করে আনতাম। আপনি কি আমাকে ফাঁসি দিতে বা আমার গলা কাটতে সদয় হবেন? যদি আপনি তাই করেন তাহলে একইভাবে আপনার সেবা করব, প্রভু। আসুন আমরা নিজেদেরকে হত্যা করি রোমানদের মত সাহসিকতার সঙ্গে এবং সহনশীলতার সঙ্গে মৃত্যুবরণ করি, যখন আমরা গ্রীকদের মত অসচ্চরিত্র এবং বিবেকবর্জিত জীবন যাপন করছি। (দরজায় করাঘাতের শব্দ শোনা গেল)।
ভলপোনিঃ শোনো, কে ওখানে? আমি কিছু পদশব্দ শুনতে পাচ্ছি। কর্মকর্তা এবং সৈনিকরা আমাদের গ্রেফতার করতে আসছে। আমি এখনই অনুভব করতে পারছি যে গরম লোহা হিসহিস শব্দ করছে যা কিনা একজন অপরাধী হিসেবে আমার কপালে অঙ্কিত করা হবে। এখন আমি আমার শাস্তির অংশ হিসেবে আমার কান কাটার ব্যাপারটা আগেই ভাবতে পারছি।
মসকাঃ আপনার পীড়া শয্যায় ফিরে যান, প্রভু, অন্ততঃ এইটুকু ভান করা আপনার উচিত। (ভলপোনি শুয়ে পড়ল) দোষী ব্যক্তিরা তাদের প্রাপ্য শাস্তি তাদের ওপর এসে হামলে পড়েছে বলে সব সময়েই কল্পনা করে।

তৃতীয় অঙ্ক, নবম দৃশ্য।
করবাসসিও, মসকা, ভলটোর (দূরে অবস্থানরত এবং আপাতঃ অদৃশ্য) প্রবেশ ।
করবাসসিওঃ কি খবর, মসকা?
মসকাঃ আমি শেষ হয়ে গিয়েছি। আমি দ্বন্দ্বে ভুগছি, স্যার। আমি জানি না কিভাবে আপনার পুত্র জেনেছেন যে, আপনি আমার প্রভু ভলপোনিকে আপনার উত্তরাধিকার হিসেবে আপনার উইল দেবার মনস্থ করেছেন, তিনি বাড়িতে ভয়ংকর রূপে আপনার খোঁজে তার খোলা তলোয়ার নিয়ে প্রবেশ করেছেন। তিনি আপনাকে দুর্ভাগা ব্যক্তি, অস্বাভাবিক বাবা বলে ডাকছিলেন, এবং শপথ করছিলেন যে তিনি আপনাকে হত্যা করবেন।
করবাসসিওঃ  আমাকে?
মসকাঃ জ্বী, এবং আমার প্রভুকেও।
করবাসসিওঃ নিশ্চিতভাবেই, তার এই আচরণ তাকে আমার উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে। এইখানে উইলটি।
মসকাঃ আপনি ভালোই করেছেন ভলপোনির জন্যে উইল তৈরী করে, স্যার।
করবাসসিওঃ এটা ঠিক হয়েছে, এবং ভালো হয়েছে। এখন আমার খাতিরে তুমি একটু কষ্ট করো।
মসকাঃ আমার জীবন, স্যার, আপনার লাভের চেয়ে বেশী সুরক্ষিত নয়। আমি শুধু আপনারই।
করবাসসিওঃ তার অবস্থা কি? তোমার কি মনে হয় যে তিনি খুব শিগগিরই মারা যাবেন?
মসকাঃ আমার মনে হচ্ছে যে তিনি হয়তো মে মাসের পরেও বেঁচে থাকবেন।
করবাসসিওঃ তুমি আজকের কথা বললে?
মসকাঃ না, তিনি মে মাসেও বেঁচে থাকবেন স্যার।
করবাসসিওঃ না, আমি তোমাকে তাই করতে আদেশ দেবো।।
ভলটোরঃ (জনান্তিকে)- এই শয়তান মসকাকে আমি খুঁজে পেয়েছি।
মসকাঃ (ভলটোরকে দেখে) ও, সিনর ভলটোর কি এখানে? আমি বিস্মিত হচ্ছি যে তিনি কি করবাসসিওর সঙ্গে আমার কথোপকথন আড়ি পেতে শুনে ফেলেছেন নাকি?
ভলটোরঃ (মসকাকে) ওরে পরজীবী!
মসকাঃ কে ওখানে? , স্যার, আপনি ঠিক সময়েই এসেছেন, আর আপনাকে অভিবাদন জানাই।
ভলটোরঃ তোমার দুমুখো চেহারা আবিষ্কার করে আমি আর অভ্যর্থিত হতে চাইনা; আমার ভয় হচ্ছে। তুমি কেবল তারই; এবং তুমি একই সময়ে আমারও। তাই নয় কি?
মসকাঃ কার সম্পর্কে আপনি কথা বলছেন? আমি, স্যার?
ভলটোর : জ্বী, আপনি স্যার। এই উইলের ব্যাপারে ফন্দিটা কি?
মসকাঃ আপনার স্বার্থেই আমি এই ফন্দিটা উদ্ভাবন করেছি স্যার।
ভলটোরঃ এসো, আমার ওপরে চালাকি খাটাতে এসো না; আমি সবই দেখতে পাই।
মসকাঃ আমি যা বলেছি তা কি আপনি শুনতে পাননি?
ভলটোরঃ হ্যা, আমি শুনেছি করবাসসিও বলেছিলেন যে তিনি তোমার ভলপোনিকে তার উত্তরাধিকারী বানিয়েছেন।
মসকাঃ তা ঠিক। আমার পরিকল্পনা অনুসারেই তিনি সেটা করেছেন; আমার পরিকল্পনা অনুসারে তিনি সেটা করতে প্ররোচিত হয়েছেন সেই আশা করে-
ভলটোরঃ সেই আশা যে তোমার প্রভু করবাসসিওকে তার উত্তরাধিকারী বানাবেন। আর তাই তুমি তাকে ভলপোনির উত্তরাধিকারী হিসেবে নিযুক্ত করার কথা দিলে?
মসকাঃ স্যার, আপনার স্বার্থের খাতিরেই আমি তা করেছি। না, আমি তার চেয়েও বেশী করেছি। আমি তার ইচ্ছের কথা তার পুত্রকে জানিয়েছি, পুত্রকে এখানে নিয়ে এসেছি এবং তাকে এমন এক জায়গায় লুকিয়ে রেখেছি যেখান থেকে কিভাবে তার বাবা আমার প্রভুকে তার উইল হস্তান্তর করেন তা শুনতে পায়। আমি এমনটা করেছি সেই বিশ্বাসের বশে, স্যার, প্রথমতঃ এরকম একটি কাজের অস্বাভাবিকতা এবং দ্বিতীয়তঃ পুত্রের বৈধ দাবীকে অস্বীকার-পুত্রকে এমন ক্রুদ্ধ করে তুলতে যাতে সে পিতার বিরুদ্ধে কোনো ভয়ংকর প্রতিশোধ নিত আর যার ফলশ্রুতিতে আইন তাকে এমন শাস্তি দিত যে তাকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করত। ফলে দুটো উত্তরাধিকার দুমুখো সৌভাগ্য আপনার জন্য থাকতো। সত্য আমার স্বস্তির উৎস হোক এবং আমার বিবেককে জাগিয়ে রাখুক। আমার একমাত্র লক্ষ্য হলো এই দুই বৃদ্ধ, পচে যাওয়া লোক যারা মৃতপ্রায়, তাদের কাছ থেকে সম্পদ এনে আপনার হাতে তুলে দেয়া-
ভলটোরঃ আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি, মসকা।
মসকাঃ যে সৌভাগ্য আপনি অর্জন করতে যাচ্ছেন তার জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে, এবং আপনার যোগ্যতার গুণেই আপনি তা পেতে যাচ্ছেন। কিন্তু তারপর দেখুন আমার আশা কেমন উল্টে গেল ।।
ভলটোরঃ কেন, কি হল?
মসকাঃ মহা দুর্ভাগ্য। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাবার জন্য আপনার সাহায্য খুব দরকার স্যার। যখন আমরা বৃদ্ধ দাঁড়কাক করবাসসিওকে আশা করি, তখন হঠাৎ করভিনোর স্ত্রী এসে হাজির, তার স্বামী নাকি তাকে এখানে পাঠিয়েছেন।
ভলটোরঃ কি, সে কি উপহার নিয়ে এখানে এসেছিল?
মসকাঃ না, স্যার, দেখা করতে এসেঁছিলেন যার উদ্দেশ্য আমি আপনাকে এখনই বলছি। যখন তিনি এখানে ছিলেন, তরুণ যুবক বোনারিও অসহিষ্ণু হয়ে দুর্দান্ত বেগে ছুটে গেলেন সামনে, মহিলাকে কজা করলেন, আমাকে আহত করলেন, মহিলাকে দিয়ে প্রতিজ্ঞা করালেন যে আমার প্রভু তাকে অসম্মান করেছেন যা এমনই একটি কর্ম যা করতে অসমর্থ আমার প্রভু, দেখতেই পাচ্ছেন। আর সেই ওজর নিয়ে, এখন তিনি তার পিতাকে অভিযুক্ত করতে গিয়েছেন, আমার প্রভুর নামে মিথ্যে অপবাদ দিতে গিয়েছেন, আপনার লক্ষ্যকে হতাশ করতে গিয়েছেন-
ভলটোরঃ সেই মহিলার স্বামী কোথায়? তাকে তাড়াতাড়ি ডেকে পাঠাও।
মসকাঃ স্যার, আমি যাচ্ছি এবং তাকে নিয়ে আসছি।
ভলটোরঃ তাকে সিনেট হাউজে নিয়ে এসো।
মসকাঃ স্যার, আমি তাই করব।
ভলটোরঃ আমাদের অবশ্যই এসব কিছুর ইতি টানতে হবে।
মসকাঃ ও, এটা করা আপনর পক্ষে একটি মহান কাজ হবে, স্যার। হায় আপনার লাভের জন্যই আমার সমস্ত প্রচেষ্টা ছিল স্যার। এই পরিকল্পনায় সুবিবেচনার কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু ভাগ্য যে কোনো মুহূর্তেই শত শিক্ষিত জ্ঞানী ব্যক্তির পরিকল্পনাও ভেস্তে দিতে পারে স্যার।
করবাসসিওঃ (কথা শুনে)-আপনারা কি বলছেন?
ভলটোরঃ (করবাসসিওকে)-আপনি কি দয়া করে একটু আসবেন, স্যার? (করবাসসিও এবং ভলটোরের প্রস্থান)।
মসকাঃ (ভলপোনিকে)-প্রভু ভেতরে যান এবং আমাদের সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করুন।
ভলপোনিঃ হ্যা, প্রয়োজনের সময় আমরা প্রার্থনার কথা ভাবি। ঈশ্বর তোমার প্রচেষ্টাকে সাফল্যের মুকুট পরিয়ে দিন।
Next Part-Volpone -Translation in Bangla-Act-4-Scene-1-2-3-4

No comments:

Post a Comment