Total Pageviews

Friday, August 9, 2019

Letter to lord Chelmsford rejecting knighthood - Rabindranath Tagore - Summary and Analysis in Bangla


Letter to lord Chelmsford rejecting knighthood - Rabindranath Tagore - Summary and Analysis in Bangla


Letter to lord Chelmsford rejecting knighthood - Rabindranath Tagore - 
Summary and Analysis in Bangla
সারাংশ ও আলোচনা
প্রথম অনুচ্ছেদ: ১৯১৯ সালের ১৮ই মার্চ লর্ড চেমসফোর্ড পুলিশকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে যে রাওলাট আইন পাশ করে তার প্রতিবাদে ১৯১৯ সালের ১৩ই এপ্রিল, পাঞ্জাবি নববর্ষে জালিয়ানওয়ালা বাগে পঁচিশ হাজার মানুষ সমবেত হয়। জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে পুলিশ ও সেনাবাহিনী নির্বিচারে গুলি করে প্রায় এক হাজার মানুষকে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ড রবীন্দ্রনাথকে অত্যন্ত মর্মাহত করে। তিনি নিরস্ত্র, নিরীহ প্রজাদের উপর সভ্য জগতের দৃষ্টান্ত বহির্ভূত সশস্ত্র আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ করেন, ঘৃণ্য কাজ বলে অভিহিত করেন।
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ: রবীন্দ্রনাথ চেমসফোর্ডকে লেখা তার চিঠিতে বলেন, কোনো নৈতিক বা রাজনৈতিক কৌশলের বিচারেই জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকাণ্ডকে যুক্তিযুক্ত বলে তিনি মেনে নিতে পারছেন না। এমনকি কোনো অপকৌশলের বিচারেও তাকে গ্রহণ করতে পারছেন না।
তৃতীয় অনুচ্ছেদ: সারা ভারতের মানুষ এই নিষ্ঠুরতা, বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ। ধীরে ধীরে সে ক্ষোভ বিস্তারিত হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ বলছেন, শাসক বৃটিশ সে প্রতিবাদকে অবজ্ঞা অবহেলাতো করছেই এবং তাদের কৃতকর্মের জন্য কোনো অনুতাপ, অনুশোচনা বোধ না করে বরং আত্মপ্রসাদ বোধ করছে।
চতুর্থ অনুচ্ছেদ: রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন, কতিপয় ইঙ্গ-ভারতীয় সংবাদপত্র শাসক শ্রেণির ঔদাসীন্যকে সমর্থন করেছে, ব্যঙ্গ করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে আর শাসক শ্রেণি তাতে হয় নীরব থেকেছে না হয় সায় দিয়েছে।
পঞ্চম অনুচ্ছেদ: তাঁর চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন; শাসক শ্রেণি যখন কোনো যুক্তি, বুদ্ধি সমঝোতার পথ অনুসরণ না করে অস্ত্রের ভাষায়ই কথা বলতে চায়, তখন তার সিদ্ধান্ত: সব অপরাধের দায় তিনি নিজের উপর নিয়ে নির্যাতিত স্বদেশবাসীর ব্যথায় সমব্যথী হয়ে, তাদের কাতারে সামিল হবেন। এটাই স্বদেশবাসীর প্রতি তার কর্তব্য বলে তিনি বিবেচনা করেন।
ষষ্ঠ অনুচ্ছেদ: শাসক শ্রেণির নির্দয় আচরণে বিক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথ তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেন স্বদেশবাসীর এমন দুর্দিনে, শাসকশ্রেণির দেয়া কোনো সম্মানসূচক উপাধি তাঁর কাছে লজ্জাকর, বিদ্রুপাত্মক মনে হয়। অতএব, তার সিদ্ধান্ত, তিনি তাঁকে দেয়া 'নাইট' উপাধি বর্জন করে স্বদেশবাসীর সমব্যথী হবেনএটাই তার প্রতিবাদের ভাষা।
সপ্তম অনুচ্ছেদ: সবশেষে সবিনয়ে রবীন্দ্রনাথ তাঁর নাইট' পদবী প্রত্যাখ্যান করেন এবং শিষ্টাচারবোধে বৃটিশ রাজার প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেন না।
১৯১৯ সালে পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগে স্থানীয় একটি সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সমবেত জনতার উপর ঔপনিবেশিক বৃটিশ সরকারের পুলিশ বাহিনী নির্বিচার গুলি চালায়। তাতে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বৃটিশ পুলিশের এই আচরণ, যে কোনো নৈতিক বা রাজনৈতিক মানদণ্ডে ছিল অগ্রহণযোগ্য। বৃটিশ শাসকরা যে ভারতীয়দের সামান্যতম মানবিক মর্যাদা দিতে নারাজ, এ মর্মান্তিক ঘটনা তারই প্রমাণ বহন করে। আজীবন রাজনীতি নিরপেক্ষ রবীন্দ্রনাথের হৃদয়ের মর্ম মূলে এ নিষ্ঠুরতা কঠিন আঘাত করে। তিনি আরো ব্যথিত হন বৃটিশদের চরম ঔদাসীন্য দেখে, ইঙ্গ ভারতীয় পত্রিকাগুলোতে এ অমানবিক আচরণের প্রশংসা দেখে। দেশের মানুষের প্রতি অবজ্ঞা, অবমাননা, পরিহাস দেখে তিনি এতই বিক্ষুব্ধ হন যে, তদানীন্তন ভাইস রয়, লর্ড চেমস ফোর্ডের কাছে লেখা বর্তমান পত্রটিতে তিনি তার নাইট' পদবী প্রত্যাহার করে ভারতবাসীর ব্যথায় সমব্যথী হতে দেবার জন্য নিবেদন করেন।
পটভূমি: ভারতে বৃটিশ শাসনের স্থায়িত্ব নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত ছিল দোদুল্যমান; কখনো স্বপক্ষে, কখনো বিপক্ষে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর স্বদেশি আন্দোলন সক্রিয় হয়ে উঠলে তিনি অধিকার বঞ্চিত, দারিদ্র্যপীড়িত ভারতবাসীর পক্ষ নেন। ১৯১৯ সালে পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের পর রবীন্দ্রনাথের ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব কঠিন হয়ে ওঠে। রেজিনাল্ড ডায়ারের নির্দেশে গুলি চালনায় বহু নিরীহ ভারতবাসী প্রাণ হারান, প্রায় দুই হাজার আহত হন। ঘটনাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ভীষণ মর্মাহত করে। তিনি তাঁর ইংরেজ বন্ধু সি এফ এন্ড্রজের কাছে পাঁচটি বিক্ষুব্ধ  চিঠি পাঠান। এজও অযাহিত এই ঘটনায় বিব্রত বোধ করেন। ১৯১৯ সালের ৩১ শে মে রবীন্দ্রনাথ ভারতের তদানীন্তন ভাইস রয় চেমসফোর্ডের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে, ১৯১৫ সালে তাঁকে দেয়া নাইটহুড প্রত্যাখ্যান করে নাইটহুড থেকে অব্যাহতি চান। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন আরো চাঙা হয়ে ওঠে।
ব্রিটিশদের বর্বরোচিত আচরণ কোনো সভ্য শাসনের সংজ্ঞায় পড়ে না। বৃটিশ ভারতবাসীকে ন্যূনতম মানবিক মর্যাদা দিতেও নারাজ ছিল, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড তারই প্রমাণ। এই নৃশংস ঘটনার জন্য ব্রিটিশ শাসকরা দুঃখ প্রকাশ তো করলই না উপরন্তু তার পক্ষে ছাপাই গাইল, বৃটিশদের নিষ্ঠুর ঔপনিবেশিকতার আসল রূপ প্রকাশ পেল।  চিঠিটিতে রবীন্দ্রনাথের ক্রুদ্ধ; শোক গম্ভীর মনোভাব প্রকাশিত : শব্দে, বাক্য বিন্যাসে। অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের কোনো কোনো মহলের বৃটিশ শাসকদের এই নিষ্ঠুরতার সমর্থন রবীন্দ্রনাথের কাছে পরিহাস মনে হয়েছে (..“making fun of our sufferings ...”)তিনি আরো ক্ষুব্ধ, ক্ষুন্ন বোধ করেন। কিন্তু পত্রটির শেষাংশে। ব্যবহৃত অতি বিনয়ী সম্ভাষণ যেন সৌজন্যবোধের চেয়েও বেশি কিছুর ইঙ্গিতবহ। ক্রুদ্ধ। বিরুদ্ধাচরণ, বিদ্রোহের রেশাত্মক নয় বলে অনেক পাঠকের কাছে মনে হতে পারে। ঐতিহাসিক এই পত্রটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটা মাইল ফলক হয়ে থাকবে। ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে চিরকাল।

No comments:

Post a Comment