Total Pageviews

Wednesday, July 15, 2020

Virginia Woolf - Life and Works - (Bangla)


Virginia Woolf - Life and Works - (Bangla)
ভার্জিনিয়া উলফ - জীবন কর্ম - Virginia Woolf - Life and Works - (Bangla)
ভার্জিনিয়া ষ্টিফেনের জন্ম ২৫ শে জানুয়ারি ১৮৮২ সালে, লন্ডনে এক সংস্কৃতিবান পরিবারে। তার পিতা লেসলি ষ্টিফেন ইংরেজি সাহিত্যের স্বর্ণযুগের বিশিষ্ট জনদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং অনেক সমালোচনামূলক, আত্মজৈবনিক দার্শনিক প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন। লন্ডনের হাইড পার্ক গেটের কাছেই ছিল ষ্টিফেন পরিবারের বাসস্থান। ভার্জিনিয়া উদার পরিবেশেই পালিত হন বড়ো হয়ে উঠেন। তার ছোটো বোন ভেনেসা ছিল তাঁর বন্ধুর মতোই। তার ছোটো ভাই থোবী মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে, ১৯০৬ সালে মারা যায়। ছোটো ভাইয়ের অকাল মৃত্যুতে ভার্জিনিয়া গভীর শোকাহত হন। তাঁর উপন্যাস ‘The voyage out’-এর ্যাচেল এবং Jacob’s Room’ উপন্যাসের জ্যাকব চরিত্র দুটি তার ছোটো ভাই থোবীর আদলেই গড়া। 
ভার্জিনিয়ার জন্মকালে তার পিতার বয়স ছিল পঞ্চাশ, সার্বিক উদ্যম, উদ্যোগ তখন তার বিগত প্রায়। লেসলি ষ্টিফেন-এর রচনা “History of Literary Thought in the Eighteenth Century“The Science of Ethicsইত্যবসরে প্রকাশিত হয়েছিল, তবু তিনি লিখে চলেছিলেন, পড়ে চলেছিলেন। পিতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভার্জিনিয়া লেখেন, তার স্পষ্ট মনে পড়ে তার পিতা হাতে ছড়ি মাথায় হ্যাট পরে তার প্রিয় পোষা কুকুর কন্যাকে (ভার্জিনিয়া) সাথে নিয়ে কেনসিংটন গার্ডেনে বেড়াতে যেতেন।লন্ডন শহরের পার্কগুলো এবং অলিগলিতে ঘুরে বেড়ানোর অভ্যাস ভাবেই ভার্জিনিয়া উলফ আত্মস্থ করেন, যা তার চিন্তা, চেতনা উপন্যাসের আবহকে বিপুলভাবে প্রভাবিত করে, তাঁর বিখ্যাত প্রবন্ধ “Street Haunting”-এর প্রধান বিষয়ই হচ্ছে এটি। 
তাঁর স্মৃতি কথায় ভার্জিনিয়া উলফ তার পরিবারের স্বাধীন পরিবেশ সম্পর্কে বলেন, তার পরিবারে চিন্তার স্বাধীনতা কর্মের স্বাধীনতাছিল। মেয়েদের সিগারেট পান তাঁর পিতা একদম পছন্দ করতেন না, কিন্তু যে স্বাধীনতা তিনি তার মেয়েদের দিয়েছিলেন তা ছিল হাজারটা সিগারেট পানের চেয়েও বেশি মূল্যবান। তাঁর পিতার নির্দিষ্ট কিছু পড়ার প্রতি দুর্বলতা থাকলেও তিনি পরিবারের সকলকেই নিজ পছন্দানুসারে পড়বার অনুমতি দিতেন, বলতেন, “তোমার যা ইচ্ছে পড়ো” “যা ভালো লাগে তাই পড়ো, যা ভালো লাগে না তা ভালো লাগার ভান করে পড়বে না।আর লেখার বিষয়ে তার পিতার পরামর্শ ছিল যা লিখবে তা যেন সংক্ষিপ্ত কিন্তু স্বচ্ছ হয়।” 
ভার্জিনিয়া উলফের তেরো বছর বয়সে তার মা মারা যান। ভার্জিনিয়ার জীবনে এটাই ছিল প্রথম মৃত্যুজনিত আঘাত। মাতৃবিয়োগ ভার্জিনিয়াকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। তার সৎ বোন ষ্টেলা ডাকওয়ার্থ তার মার মৃত্যুর পর ভেনেসা ষ্টিফেনের বয়ঃপ্রাপ্তি পর্যন্ত তাদের গার্হস্থ্য কাজের তদারক করেন। অল্পকাল পরে ষ্টেলা বিয়ে করে এবং প্রথম সন্তানের জন্মের পরই মারা যায়। 
প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যার্জন ভার্জিনিয়ার স্বাস্থ্যোপযোগী ছিল না বলে তিনি স্বগৃহেই পড়াশুনা করেন অথচ তাঁর বন্ধুরা তখন ক্যাম্ব্রিজে পড়াশুনা করতেন। ১৯০৪ সালে লেসলী ষ্টিফেন্সের মৃত্যুর পর, ভেনেসা ভার্জিনিয়া, থোবী এড্রিয়ান, ব্লুমসবারী স্কয়ারে একটা বাড়ি ভাড়া নেন। ব্লুমসবারী এলাকা তখন সাহিত্য সংস্কৃতিতে বেশ অগ্রগামী ছিল ব্লুমসবারী গ্রুপনামে সেখানে একটি সাহিত্য গোষ্ঠী ছিল, ভার্জিনিয়া উলফ ছিলেন তার প্রতিষ্ঠাত্রী। 
১৯১২ সালের ৬ই জুন ভার্জিনিয়া ষ্টিফেন শ্রীলঙ্কায় কর্মরত ব্রিটিশ সিভিল সার্ভেন্ট লেওনার্ড উলফকে বিয়ে করেন। তাদের বিবাহের মাত্র দুবছর পরই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। ভার্জিনিয়ার অতিসংবেদনশীল মনকে এই মহাযুদ্ধ ভীষণভাবে নাড়া দেয়। এমনিতেই তার শরীর-গঠন ছিল দুর্বল, যুদ্ধের শুরু থেকেই তিনি মনোঃবিকারের শিকার হন। তবুও তিনি কঠিন পরিশ্রম করে যেতে থাকেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ধকল শারীরিক মানসিকভাবে ভার্জিনিয়া উলফ তখনো সামলে উঠতে পারেননি, এমন সময় দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হলো। ভার্জিনিয়া উলফ জীবনের সব আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন। ২১ শে মার্চ ১৯৪১ সনে তিনি তার গৃহত্যাগ করেন, তার গৃহসংলগ্ন নদীর তীরে তার হ্যাট ছড়ি রেখে তিনি সে নদীর জলে ডুবে আত্মহত্যা করেন। 
জীবন-পঞ্জি 
১৮৮২: ২৫ শে জানুয়ারি, লন্ডনের কেনসিংটনের হাইড় পার্ক গেটে তার জন্ম। তাঁর মাতা জুলিয়া পিতা লেসলি ষ্টিফেন।
১৯০৪: পিতার মৃত্যুর পর তাঁর মাতা ১৮৯৫ সালে মৃত্যু বরণ করেন। ভার্জিনিয়া তাঁর ছোটো বোন ভেনেসা ছোটো ভাই এড্রিয়ান থোবীকে নিয়ে ৪৬ নম্বর গর্ডন স্কয়ারে চলে যান। সেখানেই ব্লুমসবারী সাহিত্য গোষ্ঠী গঠিত হয়।
১৯০৫: ভার্জিনিয়া পুস্তক পর্যালোচনা সমালোচনামূলক নিবন্ধ রচনা করতে শুরু করেন। টাইমস লিটারারি সাপ্লিমেন্টে অন্যান্য জার্নালে ১৯১২ সাল পর্যন্ত তার মোট চল্লিশটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়।
১৯১২ : লিওনার্ড উলফকে বিয়ে করেন তিনি ছিলেন ভার্জিনিয়ার অভিভাবক ব্যক্তিত্বের বিকাশে সহায়ক। ১৯১৫: “Voyage out” প্রকাশিত হয়। উলফ দম্পতি ব্লুমসবারী ছেড়ে হোগার্থ হাউসের ৩৪ নম্বর প্যারাডাইস রোডে চলে যান।
১৯১৬ : ভার্জিনিয়া উলফ পুনরায় লেখায় মন দেন অংশত আর্থিক প্রয়োজনে। ১৯১৬ থেকে ১৯২২ পর্যন্ত তাঁর মোট ১৫১টি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় টাইমস লিটারারি সাপ্লিমেন্টে’, ২৫টি প্রকাশিত হয় এথেনিয়াম নিউ স্টেটসম্যানপত্রিকায়। এসব রচনার অধিকাংশই অসংরক্ষিত। ১৯২২ সালের পর থেকে পত্রিকায় লেখালেখির পরিমাণ কমিয়ে দেন। তাঁর সংগৃহীত রচনাবলি ‘Common Reader' (I) (II) গ্রন্থ দুটিতে প্রকাশিত হয়। তার মৃত্যুর পর বাকি সংস্করণ তার স্বামী লিওনার্ড উলফ সম্পাদনা করেন।
১৯১৭ : উলফ দম্পতি একটি হস্তচালিত মুদ্রণ যন্ত্র ক্রয় করেন, শখের বশে এবং ভার্জিনিয়া উলফের প্রথম জীবনে রচিত কিছু ছোটো গল্প টি, এস এলিয়টের কবিতা প্রবন্ধটি প্রকাশ করেন ১৯১৯ সালে। তার রচনাসমূহের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভার্জিনিয়া উলফ দম্পতি প্রকাশনা, মুদ্রণ পুস্তক বাঁধাইয়ের কাজের চাপ সামলে উঠতে পারছিলেন না, বাধ্য হয়ে তারা পেশাদার প্রকাশকের কাছে তা ছেড়ে দেন। 
১৯১৯ : সাসেস্কে উলফ দম্পতি সপ্তাহান্তের দিন কাটাবার জন্য একটা কটেজ কেনেন।
১৯২৪ : উলফ দম্পতি তাঁদের প্রকাশনা সংস্থা হোগার্থ প্রেস৫২ নম্বর টাভিস্টক স্কোয়ারে স্থানান্তরিত করেন। ১৯২৫-৩১: “মিসেস ড্যালোওয়ে” “ওয়েভসপ্রকাশিত হয়, ভার্জিনিয়া প্রতিষ্ঠা পানি।
১৯৪০ : ভার্জিনিয়া উলফের লন্ডনের বাড়িতে বোমা বর্ষিত হয়; তখন  থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি মক্ক হাউসে বাস করেন।
১৯৪১: বার বার মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভার্জিনিয়া তার বাড়ি সংলগ্ন আউস নদীতে ডুবে আত্মহত্যা করেন। “Between the Acts” রচনা ১৯৩৮ সালে শুরু হলেও তার মৃত্যুর পর তা প্রকাশিত হয়।

No comments:

Post a Comment