Total Pageviews

Monday, January 6, 2020

Paradise lost - John Milton - Translation in Bengali - Book 1 - Part - 2

Paradise lost - John Milton - Translation in Bengali - Book 1 - Part - 2
(সতর্কীকরণঃ বাইবেলে উল্লেখিত যে ঘটনার উপর ভিত্তি করে এই কাব্য লেখা হয়েছে তা সত্য ও মিথ্যার একটি রসালো সংমিশ্রণ মাত্র।)

Previous Part    Paradise lost Summary and Analysis - Bangla

Paradise lost - John Milton - Translation in Bengali - Book 1-Part-2
ভুলেও বুঝতে পারেনি সে তার চেষ্টায় সে শুধু নিজেরই ক্ষতি করছে।
কারণে তার চেতনায় স্থূপাকার হচ্ছে ক্রমে প্রতিহিংসা গ্রহণের বাসনা
একমাত্র তারই জীবনে নেমে এসেছে জটিল বিপর্যয় আর ভয়াল দুর্দশা।
জলে সাঁতার কাটতে কাটতে হঠাৎ পায়ের তলায় সে পেল কঠিন মৃত্তিকা।
সে অতঃপর তার পাখা দুটো মেলে দিয়ে শুকনো মৃত্তিকায়।
বিশাল দেহটি নিয়ে আস্তে করে নেমে এলো।
ধূসর ছায়ায় ঢাকা সে প্রান্তরে তখন জ্বলছিল অগ্নিশিখা।
জলের মাঝে জ্বলতে থাকা অগ্নির মতো, সে অগ্নি ছিল না মোটেই তরল,
অগণিত ধাতব বস্তু দাহ্য হেতু পরিপুষ্ট এটনা (Aetna) অগ্নিগিরি হতে
যেমন ধোয়া আর আগুনের স্ফুলিঙ্গ উৎক্ষিপ্ত হয়ে বাতাসকে উত্তপ্ত করে
তেমনি সেই ধূম্রজালবেষ্টিত অগ্নিদগ্ধ বাতাস ঘেরা
বিশাল প্রান্তরের মাঝে নেমে এলো সে।
বিলজিবারের সাথে সাথে তার সহকারীও নেমে এলো প্রান্তরে।
দুজনেই নিজেদের শক্তি দ্বারা মুক্ত হলো জ্বলন্ত জলপ্রবাহ হতে।
অতঃপর সেই গৌরবহারা হতভাগ্য পাপাত্মা জানাল,
চির আলোকজ্জ্বল মনোরম জান্নাতের বদলে কি
এই অন্ধকারাচ্ছন্ন বিষাদমাখা স্থানেই হবে মোদের ঠাই?
এটাই ভালো, শক্তিমান ঈশ্বর যা করবেন তাই মঙ্গল।
তাঁর ইচ্ছাই পূরণ হবে, পালিত হবে তাঁরই নির্দেশ।
শুধুমাত্র শক্তির বলে বলিয়ান হয়ে যে সবার উপরে কর্তৃত্ব করেছে
তার থেকে যথাসম্ভব দূরে অবস্থান করাটাই নিরাপদ।
বিদায়, হে মনোহরণকারী অনুপম সেই ভূমি,
স্বাগত জানাই হে বিষাদাচ্ছন্ন নরকস্থান,
বরণ করে নাও তোমার এই নতুন অভ্যাগতকে।
স্থান আর কালের পরিবর্তনেও যার মনের ঘটে না পরিবর্তন
নিজের স্থানে সুপ্রতিষ্ঠিত সে মনই স্বর্গকে নরক আর নরককে স্বর্গ করে তোলে।
যে স্থানেই থাকি না কেন আমি তাতে কী আসে যায়,
বজ্রধারী আমার বিরুদ্ধ শক্তি হতে আমি খাটো হলে ক্ষতি কী,
এখানে অন্ততপক্ষে মোরা স্বাধীন জীবনটা যাপন করতে সমর্থ হবো।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ক্রোধ পৌছবে না এতোদূর অবধি।
তার তাড়না আর শাসনের আওতামুক্ত এই ভূমি।।
স্থানে আমরা পরম নিশ্চিন্তে রাজ্য চালাতে পারি,
আমি মনে করি রাজত্বটাই হবে মোদের সব থেকে বড় উচ্চাভিলাষ
আর স্বর্গে দাসত্ব করার চাইতে নরকে রাজত্ব করা উত্তম।
কিন্তু আমাদের সঙ্গী-সাথীরা কেন এখনো জমিনের পর
উঠে না এসে প্রজ্বলিত জলস্রোতের মাঝে গা ভাসিয়ে ভাসছে
কেন তারা মোদের ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া সেনাদের জড়ো করে
স্বর্গ রাজ্য ফের দখলে নেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে না।
শয়তান এই বাণী দেয়ার পর, বিলজিবাব জবাবে জানাল,
ওহে সুদক্ষ সেনাপতি, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ছাড়া তোমাকে হারাতে পারবে না কেউ,
এখন যারা জ্বলন্ত জলরাশির মাঝে যন্ত্রণার শেষ সীমায় পৌছে
ভয়াল এক বিপজ্জনক অবস্থায় পড়ে আছে, তারা যদি
তোমার বলিষ্ঠ আহবান একবার শুনতে পারে তাহলে ওরা
ফের নতুন করে সাহস আর উদ্দীপনা সহকারে উঠবে জেগে,
আমরাও একদা এই জ্বলন্ত জলরাশির মাঝে ভাসমান ছিলাম
মনোহর সেই জান্নাত হতে পতিত হওয়ার পরে
তাঁর কথা শেষ করার পূর্বেই তার চাইতেও বড় এক শয়তান
জ্বলন্ত পানির প্রবাহ সাঁতরে সাঁতরে এগিয়ে আসছিল কিনারা অভিমুখে,
বিশাল গোলাকৃতির ঢালটি তাঁর মনে হচ্ছিল যেন পূর্ণিমা চাঁদ,
যে চাঁদ তুস্কার (Tuscan) শিল্পীরা দূরবীন দ্বারা ফেসোলের (Fesole) গম্বুজ হতে পর্যবেক্ষণ করে।
বর্শাটি দেখতে তার নরওয়ের পাহাড়ে জন্মানো পাইনবৃক্ষের মতোই উঁচু
যে গাছ হতে তৈরি করা যেতে পারে যে কোন জাহাজের মাস্তুল,
উত্তাল সমুদ্রের মতো জল ঠেলে কিনারে এসে দাঁড়াল সে।
যে কিনারা ছিল ভালডার্নোর (Valdarno) নদী পাহাড়ঘেরা বিস্তীর্ণ প্রান্তরের মতো
জ্বলন্ত জলরাশির সেই কিনারায় উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে।
সে তার চিন্তার জালে আচ্ছন্ন সাঙ্গপাঙ্গদের কাছে ডাকলো।
তার সব সাঙ্গপাঙ্গদের অবস্থাটা হয়েছিল মিশর রাজ
ফারাওয়ের অত্যাচারে পীড়িত ইহুদীদের মতো।
ফারাও নৃপতির সেনাদল যে মিশরীর ইহুদীদের তাড়না করতে করতে
লোহিত সাগরের কিনারা অবধি নিয়ে যায় আর উপকূল
হতে দূরে সমুদ্রবক্ষে ভেসে থাকা ইহুদীদের শবদেহগুলো দেখতে থাকে
সেই অসহায় ইহুদীদের মতোই শয়তানের সাঙ্গপাঙ্গরাও,
সে জ্বলন্ত পানিতে শুধু মাথাটি বের করে ডুবে ছিল।
শয়তান সঙ্গীদের এতোটাই উচ্চস্বরে আহবান জানাল যে ...
তাতে নরকের তলদেশ পর্যন্ত শব্দের প্রতিধ্বনি ধ্বনিত হলো।
তাদের এমন পরিবর্তনে শয়তানের আহবানে চমকিত হলো সঙ্গীরা।
শয়তান জানাল তাদের, ওহে আমার সহকারী সেনাগণ,
তোমরা এতোকাল যে স্বর্গসুখ ভোগ করেছো, আজ তা হারিয়েছো,
ওহে অমর আত্মা সকল, তোমরা কি এমনি বিহবল হয়ে বিকল হয়ে থাকবে।
কিংবা অনেক যুদ্ধ করার পর স্থানটিকে নিরাপদ ঘুমানোর স্থান হিসেবে বাছাই করেছো?
অথবা তোমরা তোমাদের প্রতিপক্ষ বিজয়ীদের জয় মেনে নিয়ে
তাদেরকেই কাছে টেনে নেবার শপথ গ্রহণ করেছো?
মোদের সেই শত্রুপক্ষ এখনো জান্নাত হতে তোমাদের
এই দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় জলে ভেসে থাকা চেয়ে দেখছে,
তাঁর মন থেকে আজও মোছেনি প্রতিহিংসার দাগ।
যে কোন সময়ে বজ্রপাত দ্বারা নিপাত করতে পারে তোমাদের।
তোমাদের প্রোথিত করে ফেলতে পারে নরকের অতল গহীনে।
অতএব আর এমন করে নিদ্রামগ্ন অবস্থায় থেকো না তোমরা
জেগে উঠো, আর না জাগলে এমনি পতিত অবস্থায় থাকো চিরকাল।
প্রধান অধিনায়কের আহবানে ঘুমে মগ্ন প্রহরী দল।
যেমন ব্যস্তসমন্ত হয়ে জেগে উঠে, তেমনি শয়তানের আহবানে
তার সঙ্গী-সাথীরা লাফিয়ে জল থেকে উঠে এল কিনারায়।
যাবৎ তারা তাদের দুর্দশার বিষয়টা অনুধাবন করতে হয়নি সমর্থ
বুঝতে সমর্থ হয়নি নিদারুণ যন্ত্রণার দিকটির কথা।
তবুও তারা অধিনায়কের আহবানে আদেশ পালনে প্রস্তুতি নিল সবাই।
একদা মিশরে অবস্থানকালে আমরাম পুত্র সমুদ্রতীরে বেড়াতে বেড়াতে।
পুবালী হাওয়ায় ভেসে যাওয়া মেঘদলের মতো পঙ্গপালদের আহবান করে
আর সেইসব পঙ্গপাল অসৎ অধার্মিক ফারাওয়ের পুরো রাজ্য
অন্ধকারে আচ্ছন্ন করে দেয় তাদের পাখা বিস্তার করে।
সে রকমই এই ঈশ্বর বিরোধী শয়তানের সঙ্গী-সাথীরা।
পাখা মেলে দিয়ে আঁধারে ঢেকে দিল নরকের আকাশসীমা।।
অতঃপর ওদের অধিনায়ক বর্শা ঊর্ধ্বে তুলে পথ দেখানোর সাথে সাথে
জল হতে উঠে এসে তারা দাঁড়িয়ে পড়ল কঠিন মৃত্তিকায়।
মধ্যযুগে উত্তর ইউরোপ হতে আক্রমণকারী বুনোদের মতোই ছিল তারা অগণিত।
সেই বুননাজাতির আক্রমণকারীরা উত্তর দিক হতে রাইন দানিয়ুব (Rhene or the Danaw) নদী পাড় হয়ে।
বন্যা স্রোতের মতো জিব্রালটার (Gibraltar) প্রণালী আর মরু অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
ঠিক তেমনি শয়তানের বিদ্রোহী সব অনুচর প্রধানের নির্দেশে
যে যেখানে দাঁড়ানো ছিল সে স্থানেই অবস্থান নিল।
এই দেবদূতদের দেহের গড়ন ছিল মানুষের চেয়ে মনোহর সুগঠিত রাজকীয়।
একদা এরা স্বর্গলোকে বাস করতো রাজকীয় সম্মানের সাথে,
কিন্তু বিদ্রোহ আর চক্রান্ত করার কারণে স্বর্গ থেকে মুছে যায় তাদের নাম,
সবাই হারিয়ে ফেলে তাদের মান মর্যাদা আর সম্মান।
আদি মাতা ঈভের সন্তানদের মতো তারা পায়নি নতুন নাম
ঈশ্বরের শাস্তির ফলশ্রুতিতে স্বর্গচ্যুত হয়ে যখন
মানব পৃথিবীতে ঘুরছিল ফিরছিল উদ্দেশ্যহীন ভাবে
তখন এই পতিত বিদ্রোহী দেবদূত দল মিথ্যা ছলনায় মানবকুলকে
দুর্নীতিতে ডুবিয়ে দিয়ে পথ ভ্রষ্ট করে ফেলে।
মহান ঈশ্বরকে ত্যাগ করিয়ে ছাড়ে তারা শেষাবধি।


ঈশ্বরের নির্দেশে দেবদূত থেকে তারা বর্বর অসভ্য বনে যায়
অর্থ সম্পদ আর ঐশ্বর্যের লোভে পড়ে মর্তের মানবকুল
দেবতাদের ফেলে সেই সব শয়তানদেরকেই কাছে টেনে নেয়।
নাস্তিক মানব সমাজে শয়তান দল নানা নামে পুজো পেতে থাকে।
বলো মিউজ, কী কী নামে ডাকা হয় তাদের
এদের মাঝে কে প্রথমে আর কেইবা শেষে তাদের মহান
সম্রাটের আহবানে সাড়া দিয়ে দাঁড়ায় আগ্নেয় প্রান্তরে
এদেরই মাঝে অন্যতম যারা তারা নরকের গভীর গুহা হতে বের হয়ে
মানুষ শিকার করার উদ্দেশ্যে ঘুরা ফিরা করে পৃথিবীতে।
মানব সমাজে ঘুরে ঘুরে শেষে দেবতার স্থান দখল করে,
আহবান করে মানুষকে তাদেরকে পূজা করার জন্যে।
প্রতিটি মন্দিরে তাদের মূর্তি গড়ে পুজো অর্চনা চলতে থাকে
আর এভাবেই তারা তাদের হীন মনোবৃত্তি দ্বারা ম্লান করে ঈশ্বরের আলোক শিখা
প্রথমে আসে দেবতা মলোচ (Moloch) যার মূর্তি নরবলির রক্ত দ্বারা রঞ্জিত হয়
আর তা হাজারো পিতা-মাতার অশ্রু জলে ভেজা থাকে সর্বদাই
বহু সংখ্যক দুন্দুভি আর কাসার ঘন্টার তুমুল আওয়াজে।
বলির শিশু আর তাদের পিতা-মাতার কান্নার আওয়াজ ঢেকে যায়,
অতঃপর সেই নরবলির মাংস আগুনে ঝলসে ঝলসে
ভোগের সামগ্রী হিসেবে ভেট দেয়া হতো সেই মূর্তিকে
অ্যামোরনাইট (Ammonite) নামের এক দেবতাকে পুজো দেয়া হতো।
আগব (Argob), রাব্বা (Rabba) আর বেসানের (Basan) নদী জলে।
কিন্তু এ দেবতা পুজোতে খুশি না হয়ে মহান হৃদয় সলোমনকে
প্রভাবিত করে তাকে দিয়ে সেই জঘন্য পর্বতের উপরে,
ঈশ্বরের আরাধনার মন্দিরের পাশে আরেক মন্দির বানায়।
আর এর ফলে জেরুজালেমের কাছের মনোরম হিনম (Hinnom) উপত্যকা
বলির রক্তে রঞ্জিত হয়ে জঘন্য নরকের রূপ নেয়।
আরেক দেবতার নাম কেমস (Chemos), অরোয়ার হতে নেবো (Aroar to Nebo)
আর হেসিবনের (Hesebon) দক্ষিণের বিস্তীর্ণ আবারিম (Abarim) অরণ্য অঞ্চল জুড়ে
অত্যাচারী মোয়াবের পুত্রেরা (Moab’s son) এর পুজো প্রদান করতো।।
আর এরপর থেকে হরনাইম (Horonaim) পর্যন্ত বিস্তীর্ণ সিওনের (Seon) রাজা আর।
তার আঙুর বিথীকায় ঘেরা সিমবা (Sibma clad) ফুলছাওয়া উপত্যকায় পূজিত হতো।
আরেক দেবতার নাম পিওর (Peor) সিট্রিম ইহুদীরা (Israel in Sittim )
যখন নীলনদের একজায়গায় প্রস্তুতি নিচ্ছিল অভিযান করার
সে তখন তাদের প্রভাবিত করে পশু বলি দেয়ার জন্যে,
যার কারণে ইহুদীদের অনেক দুর্দশা ভোগ করতে হয়।
অতঃপর সে মাউন্ট অলিভ অবধি পশুবলির নিদারুণ প্রথার জন্ম দেয়।
আর সেই সাথে নরবলির প্রথাও চলে সমান গতিতে,
শেষে জোসিয়া (Josiah) একদা এই জঘন্য বলি প্রথা উচ্ছেদ করেন।
এরপর এলো বালিম (Baalim) আর অ্যাস্টারথ (Ashtaroth) নামে দুরমণী
যারা মিশর আর সিরিয়ার মাঝামাঝি স্ত্রী দেবী হিসেবে পুজো পেতে থাকে
বিদ্রোহী দেবদূতদের পরিশুদ্ধ আত্মার মাংসধারী শরীর না থাকায় ইচ্ছেমতো
তারা পুরুষ আর নারী মূর্তি ধারণ করতে পারে।
যে কোন সময়ে তারা মনোহর কিংবা বীভৎস মূর্তি ধারণ করে
মিত্রতা কিংবা শত্রুতা দ্বারা তারা উদ্দেশ্য সাধন করতে পারে
আর এই সব অপদেবতার পাল্লায় পড়ে ইহুদী জাতি তাদের
পূজিতদের বাদ দিয়ে জঘন্য প্রবৃত্তির দেবতাদের পুজো দিতে থাকে
আর এইসব নারকীয় দেব-দেবীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তারা
আকাশে যুদ্ধরত হয়ে ঘৃণিত শক্রর কাছে মাথা নত করতে থাকে।
ফিনিশীয়রা এই অপদেবী এ্যাস্টারথকে স্বর্গরানী অ্যাসতার্তে (Astarte) নামে ডাকতো,
দেবীর মস্তকে দুটো শিং অর্ধচন্দ্রের মতো শোভা পেতো।
সিডোনিয়ার (Sidonian) কুমারী মেয়েরা জ্যোৎস্নালোকিত রাতে দেবীর সম্মুখে
পূজার অর্ঘ রেখে গান গেয়ে পুজো দিতো।
সিওনে দেবী পূজিত হয় পাহাড় চূড়ার এক মন্দিরে
কোন কালে এক রাজা নির্মাণ করেছিলেন মন্দির,
মহান রাজা উদার হৃদয়ের অধিকারী থাকা সত্ত্বেও
সুন্দরী দেবীর প্রভাবে সেখানে চলতে থাকে সব অপদেবতার পুজো।
এরপর আসে থ্যামুজ (Thammuz), প্রত্যেক বছর গ্রীষ্মের কোন এক তিথিতে
সিডোনিয়ার কুমারীরা যার আঘাত পেয়ে করুণ সুরে করে শোকের বিলাপধ্বনি
প্রত্যেক বছর ভেনাসের প্রেমিক এ্যাডোনিসের (Adonis) আঘাতে একবার করে আহত হয় থ্যামুজ
আর তারই রক্তে মাখামাখি হয়ে এ্যাডোনিস ঝাপিয়ে পড়ে সাগর জলে।
তারই ব্যর্থ প্রেমের কাহিনী দ্বারা আবৃত হয় সিওন কন্যার অন্তর।
এরপরই এলো আরেকজন ইজকিল (Ezekiel ), আসলেই সে বিলাপ করছিল তারই উদ্দেশ্যে
একটি চৌকাঠের আঘাতে মন্দিরের মাঝে দুমড়ে যায় তার মূর্তি,
মাথা আর হাত দুটো বিচ্ছিন্ন হয় তার শরীর হতে
মূতিটা গড়িয়ে পড়ে বেদীর উপরিভাগে, লজ্জিত হয় ভক্তকুল।
ডাগন (Dagon) নামের আর এক সমুদ্রদানব, উপর দিকটা মানুষ আর নীচের দিক সে মাছ
তবুও প্যালেস্টাইনের দক্ষিণ অঞ্চল আজুটাস (Azotus) নামক শহরে
এই দানবাকৃতি দেবতার বিশাল উঁচু এক মন্দির গড়া হয়,
প্যালেস্টাইনের পুরো উপকূল জুড়ে গথ আর অ্যাসকলিন (Gath and Ascalon) সহ
অত্যন্ত ভীতির দৃষ্টি নিয়ে পূজিত হতো এই দেবতা,
একেরন গাজার (Accaron and Gaza) সীমান্ত অঞ্চলেও পূজিত হতো সে।
এরপর আসে সিরিয়ার অন্যতম দেবতা রিম্মন(Rimmon)
দামাস্কাসের (Damascus) এক মনোরম মন্দিরে স্থাপিত হয় তার মূর্তি
আব্বানা আর ফারফার (Abbana and Pharphar) নামক দুই নদীর উর্বর এলাকায় পূজিত হয় সে।
নামান নামের সিরিয়ার এক সেনাপতি জর্ডান নদীতে
গোসল করার পরে সেরে যায় তার শরীরের কুষ্ঠ ব্যাধি,
অতঃপর সে ইহুদীদের দেবতার রীতিমতো ভক্ত হয়ে পড়ে সে।
আহাজ (Ahaz) নামের জুডার এক রাজা সিরিয়ার সেনাপতিকে হটিয়ে
তার পুত্রদের পুড়িয়ে হত্যা করে অগ্নি সহযোগে
প্রথমে সিরিয়ার দেবতাদের রীতিমতো অসম্মান করতো সে।
পরবর্তীকালে সে এই দেবতাদের রীতিমতো ভক্ত হয়ে উঠে।
                                                       Next Part

No comments:

Post a Comment