![]() |
Of Studies - Sir Francis Bacon - Translation in Bangla |
অধ্যয়ন - স্যার ফ্রান্সিস বেকন (বাংলা অনুবাদ) [প্রথম প্রকাশ - ১৫৯৭ সাল]
অধ্যয়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে আনন্দ লাভ, সৌন্দর্যবর্ধন ও সামর্থ
(বৃদ্ধি)। অধ্যয়নের প্রধান কাজ হচ্ছে একাকীত্বের সময়ে আমাদের আনন্দ দেয়া, বক্তৃতা
ও আলোচনার ক্ষেত্রে শোভাবর্ধন আর বিচার-বিশ্লেষন ও অন্যান্য কাজের (Business) ক্ষেত্রে
আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি। দক্ষ মানুষেরা সুচারুরূপে দায়িত্ব
সম্পাদন করতে পারেন এবং ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে আলাদাভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করতে পারেন, কিন্তু সাধারণ
পরামর্শ প্রদান, পরিকল্পনা
গ্রহণ এবং
সুষ্ঠু কর্মসম্পাদন সম্ভব হয় সেইসব মানুষদের দ্বারা, যারা সুশিক্ষিত। পড়াশুনায়
অত্যধিক সময় ব্যয় করাটা অলসতার লক্ষণ; সৌন্দর্য সৃষ্টির জন্য অতিমাত্রায়
পড়াশুনার প্রতিফলন ঘটানো কৃত্রিমতার বহিঃপ্রকাশ; আর বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে বেশিমাত্রায়
জ্ঞান ফলানো জ্ঞানীর হাস্যকর হয়ে ওঠার শামিল। পড়াশুনা আমাদের স্বভাবের উৎকর্ষ সাধন
করে, আর অভিজ্ঞতা পড়াশুনাকে
পরিপূর্ণতা দান করে। আমাদের প্রকৃতিপ্রদত্ত ক্ষমতা প্রাকৃতিক গাছপালার মতো; পড়াশুনার
মাধ্যমেই যার আগাছা নির্মূল করতে হয়; আর অভিজ্ঞতার মাধ্যমে লাগাম টেনে না ধরলে তা
আমাদের বড্ড বেশিমাত্রায় অস্পষ্ট নির্দেশনা দিতে থাকে। চতুর লোকেরা অধ্যয়নকে অবজ্ঞা
করেন; সাধারন লোকেরা
(অধ্যয়ন করাকে) সম্মান করে আর জ্ঞানীরা তাকে (তাদের অধ্যয়নলব্ধ জ্ঞান) ব্যবহার
করেন; কিন্তু তারা
কেউই তাদের ব্যবহার পদ্ধতি অন্যকে জানতে দেন না, কিন্তু পড়াশুনা
ব্যতিরেকে এবং পড়াশুনার বাইরে তাও এক ধরনের জ্ঞান, যা তারা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অর্জন করে থাকেন। শুধু
বিরোধিতা বা কোনো মতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা; কোনো কিছুকে সত্য বা অবধারিত বলে মনে করা; কিংবা কথাবার্তা
বা যুক্তিতর্কের উপাদান সংগ্রহ করা পড়াশুনার উদ্দেশ্য হতে পারে না, বরং তার হবে উদ্দেশ্য
বিচার-বিশ্লেষণ ও বিবেচনাশক্তি তৈরি। কিছু
বই শুধু রস আস্বাদন করে দেখতে হয়, কিছু বইকে গিলে ফেলতে হয়, আর কিছু বইকে
চিবিয়ে হজম করতে হয়। অর্থাৎ
কিছু বইয়ের অংশবিশেষ পড়লেই চলে; কিছু পুরোটাই বই পড়তে হয়, তবে খুব বেশি আগ্রহ
নিয়ে নয়; আর কিছু বইয়ের
পুরোটা পড়তে হয় এবং তা যথেষ্ট অধ্যবসায় ও মনোযোগর সাথে। কিছু বই অন্যদের দিয়ে পড়াতে
হয় এবং সারাংশ তৈরি করিয়ে নিলেই চলে; কিন্তু তা করা যেতে পারে শুধু স্বল্প
গুরুত্বপূর্ণ বইপত্রের বেলায়। সংক্ষিপ্ত
বই বিশুদ্ধ পানির মতো, স্বাদহীন। অধ্যয়ন মানুষকে পূর্ণতা দান করে, মতবিনিময় চটপটে, আর লেখনী তাকে
নির্ভুল করে তোলে। আর তাই যার লেখালেখির অভ্যাস কম তার স্মৃতিশক্তি প্রখর হওয়া
দরকার; আর যিনি আলাপ-আলোচনা
বা মতবিনিময় কম করেন, তার উপস্থিত বুদ্ধি থাকা প্রয়োজন; আর পাঠাভ্যাস কম
যার তাকে চতুর হতে হয় যাতে অন্যে বুঝতে না পারেন যে, তিনি তেমন পড়াশুনা করেন না।
ইতিহাস মানুষকে জ্ঞানী করে তোলে; কাব্য করে রসিক ও বুদ্ধিমান; গণিতচর্চা মানুষকে
করে কৌশলী; প্রাকৃতিক
দর্শন (তার মাঝে সৃষ্টি করে) গভীরতা; নৈতিক জ্ঞান তার গাম্ভির্য (বাড়ায়); আর যুক্তিবিদ্যা
ও আলংকারিক ভাষাচর্চা বিতর্কের সামর্থ্য বাড়ায়। পড়াশুনা মানুষের চরিত্র পালটে দেয়। শুধু তাই নয়, মানুষের বুদ্ধির প্রতিবন্ধকতা দূর করা যায় পড়াশুনার
মাধ্যমে, যেভাবে সঠিক শরীরচর্চার
মাধ্যমে শরীরের নানা রোগবালাই সারিয়ে তোলা যায়। বল খেলাটা মূত্রাশয় ও কিডনির জন্য ভালো; তীরচালনা ভালো
ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের জন্য; হালকা হাঁটাহাঁটি পাকস্থলী আর ঘোড়দৌড়
মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য ভালো। সুতরাং
কারো যদি চিত্তবিক্ষেপ দেখা দেয় তার গণিতশাস্ত্র অধ্যয়ন করা উচিত, তার পরও যদি
দেখা যায় যে, তার
মনোযোগ ফিরে আসছে না, তাহলে উচিত হবে পুনরায় মনোনিবেশ করা। যদি তার
বুদ্ধি কোনো কিছুর পার্থক্য নিরূপণে সক্ষম না হয় তার স্কুলমেনদের (নির্দিষ্ট
বিষয়ের উপর জ্ঞানীদের দল অথবা মধ্যযুগের ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যারা
অ্যারিস্টোটলীয় তর্কবিদ্যার সাহায্যে শাস্ত্র ব্যাখ্যাকারী ধর্মবেত্তা) রচনা পাঠ
করা উচিত। কারণ তাঁরা চুলচেরা বিশ্লেষক। যদি তারা এক বিষয় থেকে আরেক বিষয়ে যেতে না
পারেন, এবং কোনো কিছু প্রমাণ
বা ব্যাখ্যা করতে অক্ষম হন, তাদের আইনের নজিরসমূহ অধ্যয়ন করা উচিত। কারণ
মনের অসুখ সারাতে বিশেষ ঔষধ রয়েছে।
thanks...bro
ReplyDeleteOutstanding....
ReplyDeleteঅনেক সুন্দর হয়েছে উপস্থাপনা।
ReplyDeleteNicely translated
ReplyDeleteAwesome
ReplyDeleteTremendous presentation.thanks
ReplyDelete