Total Pageviews

Monday, October 7, 2019

Of Plantation - Sir Francis Bacon - Translation in Bangla

Of Plantation - Sir Francis Bacon - Translation in Bngla


Of Plantation - Sir Francis Bacon - Translation in Bngla
উপনিবেশ স্থাপন বিষয়ক প্রবন্ধ [প্রথম প্রকাশ - ১৬১২ সাল]
মানুষের সব থেকে প্রাচীন, আদিম ও ঐতিহাসিক কাজ হল উপনিবেশ স্থাপন। তরুণ বয়সে পৃথিবী প্রচুর সন্তানের জন্ম দিলেও এখন বৃদ্ধাবস্থায় পৌছে সে স্বল্পসংখ্যক সন্তানের জন্ম দিচ্ছে। নতুন উপনিবেশকে আমি পূর্বতন সাম্রাজ্যের সন্তান বলে মনে করি। সম্পূর্ণ নতুন জায়গায় উপনিবেশ স্থাপনকে আমি সমর্থন করি যেখানে কাউকে জায়গা দিতে অন্যদের উচ্ছেদ করার প্রয়োজন পড়ে না। এটা বসতি স্থাপন নয়, বরং উচ্ছেদউপনিবেশ স্থাপন বৃক্ষরোপণের মতো; লাভ গুনতে হলে কমপক্ষে বিশ বছর অপেক্ষা করতে হয়, তারপরই ফলটা পাওয়া যায়একেবারে শুরুতেই বেশি বেশি লাভ তুলে নেওয়ার চেষ্টাই হল অধিকাংশ উপনিবেশ ধ্বংসের মূল কারণ হল। এটা সত্য যে, দ্রুত লাভের বিষয়টি অবজ্ঞা করার নয়, তবে তা ওই উপনিবেশের জনসাধারণের মঙ্গল ও ভবিষ্যতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। আজেবাজে, ধূর্ত ও নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে উপনিবেশ স্থাপন করতে যাওয়া খুবই লজ্জাজনক ও গর্হিত কাজ, আর তাতে উপনিবেশের উদ্দেশ্যই ব্যাহত হতে পারে, কারণ তারা দুবৃত্ত হয়ে ওঠে, কাজকাম করে না, আলসে হয়ে থাকে, অন্যের অনিষ্ট করে, খাদ্যের অপচয় করে, দ্রুতই ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং নিজের দেশে নেতিবাচক খবর সরবরাহ করে। সাধারণত মালী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, ছুতোর, জেলে, ব্যাধের সাথে কিছুসংখ্যক চিকিৎসক, শৈল্যবিদ, পাচক এবং রুটি প্রস্তুতকারক নিয়ে নতুন উপনিবেশ স্থাপন করতে হয়আর প্রথমেই খুঁজে দেখতে হয় সেখানে কোন পণ্য বেশি উৎপন্ন হয় : বাদাম, আখরোট, আনারস, জলপাই, খেজুর, তাল, চেরিফল বা ওই জাতীয় অন্যান্য ফল এবং তার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হয় তারপর দেখতে হয় কোন ধরনের ফসল সেখানে দ্রুত ফলে এবং তা এক বছরের মধ্যে; যেমন মূলা, গাজর, শালগম, পিঁয়াজ, ভুট্টা ইত্যাদি। যেহেতু গম, বার্লি ও যব ফলাতে প্রচুর শ্রম দিতে হয়, তাই মটরশুঁটি, শিম ইত্যাদি দিয়ে শুরু করা যেতে পারে, কারণ এগুলোতে স্বল্প পরিশ্রম দরকার পড়ে এবং তা মাংস ও রুটির চাহিদা পূরণ করে থাকে। ধান যেখানে প্রচুর পরিমাণে ফলে সেখানে তা মাংসের বিকল্প হয়ে ওঠে। সর্বোপরি সেখানে শুরুতে ধান-গম ফলার আগে বিস্কুট, যবের ছাতু, ময়দা-আটা ইত্যাদির পর্যাপ্ত মজুদ রাখতে হয়পশু-পাখিদের বেলায় প্রধানত সেগুলোই সঙ্গে নিতে হয় যেগুলোর রোগবালাই কম হয় এবং সংখ্যায় দ্রুত বাড়ে; যেমনঃ ছাগল, হাঁস-মুরগি, টার্কি মোরগ, কবুতর ইত্যাদি। নতুন উপনিবেশে অবরুদ্ধ শহরের মতো খাদ্যশস্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে বরাদ্দ দিতে হয়জমির বেশির ভাগ ফল ও খাদ্যশস্য ফলানোর কাজে ব্যবহার করতে হবে; উৎপাদিত ফসল জড়ো করে মজুদ করতে হবে; তারপর সঠিক অনুপাতে বিতরণ করতে হবে; তা ছাড়া কিছু কিছু জমি ব্যক্তি মালিকানায় ছেড়ে দিতে হবে চাষাবাদের জন্য। আরো বিবেচনা করতে হবে যে, নতুন উপনিবেশে কোন কোন পণ্য স্বাভাবিকভাবেই জন্মায় যার রপ্তানিলব্ধ আয় দিয়ে উপনিবেশের খরচখরচা চলতে পারে (তবে আগেই বলা হয়েছে যে, তা মূল কাজকে বাদ দিয়ে আগেভাগে করা অনুচিত)। যেমন, ভার্জিনিয়ার তামাক বিক্রি করে ওই উপনিবেশের খরচ চলেছে। কাঠ সাধারণত প্রচুর পরিমাণে জন্মায়, ফলে সহজেই তা রপ্তানিযোগ্য পণ্য হতে পারে। যদি কোথাও লোহা পাওয়া যায় তাহলে সেখানে লোহার কারখানা স্থাপন করা যেতে পারে। যদি কোথাও একই সাথে লোহা আর কাঠ পাওয়া যায় তাহলে দ্বিগুণ লাভ। পরিবেশ অনুকূল হলে বে-সল্ট (Bay salt) উৎপাদনের অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়সিল্কের কাপড় উৎপাদন করলে তাও রপ্তানি পণ্য হয়ে উঠতে পারে। যেখানে প্রচুর পাইন ও দেবদারু বৃক্ষ জন্মায় সেখানে পিচ ও আলকাতরা উৎপাদিত হতে পারে। মাদক ও আগর কাঠও অর্থকরী হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু মাটির নিচে খনিজ সম্পদ খুব বেশি নাও থাকতে পারে, সেই প্রত্যাশায় বেশি খোড়াখুঁড়ি না করাই ভালো, তাতে প্রত্যাশায় থাকতে থাকতে মানুষ অলস প্রকৃতির হয়ে যায় নতুন উপনিবেশের সরকার একজনের হাতে ন্যস্ত হতে হবে; আর কিছু পরামর্শক তাঁকে সাহায্য করবেন এবং কিছুটা লাগাম দিয়ে তাদের সামরিক বল প্রয়োগের ক্ষমতা দিতে হবে। সর্বোপরি বর্বর দেশ থেকে লাভ তুলে আনতে হবে বটে, কিন্তু ঈশ্বর ও তার উপাসনার কথা ভুলে গেলে চলবে না। নতুন উপনিবেশের সরকার মূল দেশের অধিকসংখ্যক উপদেষ্টা ও পরামর্শকের ওপর নির্ভর করবে না; সংখ্যাটা স্বল্প হতে হবে; আর তারা ব্যবসায়ী না হয়ে যেন ভদ্র ও অভিজাত শ্রেণীর মানুষ হন; কারণ ব্যবসায়ীরা শুধু তাৎক্ষণিক লাভালাভের বিষয়টি খোঁজেন। উপনিবেশ, শক্তিশালী হয়ে না ওঠা পর্যন্ত পণ্যের ওপর কোনো প্রকার করারোপ করা ঠিক হবে না; পণ্যকে শুধু করমুক্ত রাখলেই চলবে না, যেখানে নিয়ে বিক্রি করলে বেশি মুনাফা হবে সেখানে বহনের স্বাধীনতা থাকতে হবে; শুধু যেখানে বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে সেই স্থান ছাড়া দলে দলে লোক পাঠিয়ে নতুন উপনিবেশে ভিড় বাড়ানো অনুচিত; বরং তাদের হ্রাসপ্রাপ্তির দিকে তীক্ষ দৃষ্টি রেখে সেই পরিমাণ লোক আবার পাঠিয়ে দেওয়া উচিত; যদি জনসংখ্যা সঠিক থাকে তাহলে দারিদ্র্যের কারণে অর্থনীতির ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি হবে না। দেখা গেছে যে, নদী ও সমুদ্রের ধারে অনুর্বর জলাভূমিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তা উপনিবেশকে সংকটে ফেলেছে। যদিও পরিবহন সমস্যা ও অন্যান্য অসুবিধা এড়ানোর জন্য ওই সকল স্থান নির্বাচন করা হয়, তথাপি উচিত হবে উঁচুস্থানে প্রকল্প নির্মাণ। তা ছাড়া নতুন উপনিবেশের জন্য শুরুতেই লবণ মজুদ করে রাখাটা সঠিক হবে যাতে করে প্রয়োজনের সময় খাদ্যশস্যের সাথে ব্যবহার করা যায়যদি বর্বর অধ্যুষিৎ কোনো স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করা হয় তাহলে তাদের যেনতেনভাবে যৎসামান্য দিয়ে খুশি রাখার চেষ্টা করা অনুচিত; বরং সঠিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তাদের সাথে যথাযথ ও অমায়িক ব্যবহার করা উচিত; তাদের বেশি সাহায্য-সহযোগিতা করে তাদের মন জয়ের প্রচেষ্টা না করাই ভালো, তাতে তারা তাদের শত্রুদের আক্রমণ করে বসতে পারে, আর প্রতিরক্ষার জন্য এটা অচল; ভালো হয়, যদি মাঝে মাঝে বর্বরদের কিছু কিছু করে উপনিবেশ স্থাপনকারী দেশে পাঠানো যায়, তাতে তারা ওখানে উন্নত জীবনযাপন প্রণালি সম্পর্কে অবগত হতে পারবে এবং ফিরে এসে তাদের দেশের মানুষকে তা জানাতে পারবে।। এরপর উপনিবেশ শক্তিশালী হয়ে উঠলে মূল ভূখণ্ড থেকে পুরুষদের সাথে নারীদেরও আনা যেতে পারে, যাতে করে সেখানে বংশবৃদ্ধি ঘটতে পারে এবং তাদের অনুপস্থিতিতে যেন উপনিবেশ বিলুপ্ত হয়ে না যায়যখন একটা নতুন উপনিবেশ উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে থাকে তখন তাকে ছেড়ে চলে আসা বা খালি করে ফেলা বড় পাপের শামিল, কারণ তা অসম্মানজনক হওয়া ছাড়াও অনেক অসহায় দূর্বল মানুষের রক্তের বিরুদ্ধে অপরাধ।


1 comment: