Total Pageviews

Sunday, August 19, 2018

The gift of Magi - O'Henry- Bangla Translation of full story - দ্যা গিফট অফ ম্যাজাই - সম্পূর্ণ গল্পের বাংলা অনুবাদ ২ পর্বের ২য় পর্ব



The gift of Magi - O'Henry- Bangla Translation of full story
সম্মান ১ম বর্ষের অন্যান্য অনুবাদ 

অনুবাদ -  মারুফ মাহমুদ, এম এ, ঢাকা কলেজ 

The gift of Magi - O'Henry- Bangla Translation of full story

প্রথম অংশের লিংক  



প্রথম অংশের পর থেকে বাকী অংশ 


জিম যদি দ্বিতীয়বার   আমার দিকে তাকানোর আগেই আমাকে মেরে না ফেলে তাহলে সে নির্ঘাত বলবে, আমাকে কনি আইল্যান্ডের কোরাস গার্লদের লাগছেকিন্তু এছাড়া আমার আর কি বা আর করার ছিল মাত্র ১ ডলার ৮৭ সেন্ট দিয়ে?'


ঠিক সাতটার দিকে ডেলা জিমের জন্য কফি তৈরী করল এবং চপ রান্নার জন্য গ্যাস স্টোভের উপরে ফ্রাই পেন বসালো।

জিম কখনো দেরী করে বাড়ি ফিরে না; ডেলা ধাতব চেইনটি ডাবল করে হাতে রাখলো এবং টেবিলের একদম কোনায় গিয়ে বসলো, যেখান ঘরের সদর দরজা আছে। হঠাৎ ডেলা সিঁড়িতে জিমের পায়ের আওয়াজ শুনতে পেল; মুহুর্তের জন্য তার মুখটি ফ্যাকাশে হয়ে উঠলো। দৈনন্দিন বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে ডেলার নীরবে প্রার্থনার অভ্যাস আছে, আজো ফিসফিস করে প্রার্থনা করলো,
'
হে জগদীশ্বর, সে যেন ভাবে আমি এখনো সুন্দরী আছি।'

বাইরে থেকে জিম দরজা খোলে ভেতরে ঢুঁকে আবার দরজাটি বন্ধ করে দিল। তাকে খুব রোগা মনে হচ্ছিল। মাত্র ২২ বছর বয়সে দারিদ্র্যতা তাকে পুড়িয়ে মারছে। তার একটি নতুন ওভারকোট  প্রয়োজন। এমনকি এই শীতেও তার হাতে কোন গ্লাভস পর্যন্ত নেই।

জিম ঘরে প্রবেশ করলো, ভেতরে ঢুঁকেই তার দৃষ্টি স্থির হয়ে রইলো ডেলার দিকে। তার এভাবে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা দেখে ডেলা ভয় পেয়ে গেল। তাদের এ চোখা চোখি এতো তীক্ষ্ণ ছিল যা ডেলার পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

এই চাহনীতে নেই কোন রাগ, নেই কোন বিস্ময়, নেই কোন অপসন্দ, নেই কোন ভয়াবহতা; এমনকি নেই কোন অনুভূতি যার জন্য ডেলা ভীত ছিল। ডেলার দিকে সে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।
ডেলা এবার টেবিল থেকে উঠে জিমের সামনাসামনি হল।

ডেলা চিৎকার করে বলে উঠলো, প্রিয়তম, আমার দিকে এভাবে তাকিয়ো না আমি চুলগুলো কেটে বিক্রি করেছি, কারণ আমি তোমাকে বড়দিনে কোন উপহার না দিয়ে থাকতে পারবো না। দেখো, 'আমার চুলগুলো খুব তাড়াতাড়ি আবার গজিয়ে উঠবে'তুমি কিছু মনে করো না, তুমি কি মন খারাপ করবে? আমি এই মাত্রই এটা করেছি। আমার কাছে আর কোন বিকল্প ছিল না। আমার চুল অসম্ভব দ্রুতগতিতে বাড়ে।
বলো জিম, 'মেরি ক্রিসমাস!' চলো আমরা আনন্দ করি। আর তুমিতো এখোনো দেখনি আমি কত সুন্দর একটি উপহার তোমার জন্য কিনে এনেছি।'

তুমি চুলগুলো কেটে ফেললে?'অনেক পরিশ্রমক্লান্ত স্বরে জিম বললো।

আমি চুলগুলো কেটেছি এবং বিক্রিও করেছি' উত্তর দিল ডেলা।
তুমি কি আমাকে আগের মত ভালো বাসবে না? দেখো আমি তো আগের আমিই আছি, শুধু চুলগুলোই নেই, তাই না?'

তুমি বলছো তোমার চুলগুলো নেই, একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জিম বলল। জিম ঘরের চতুর্দিকে বোকার মত তাকালো।

খুঁজে লাভ হবে না, চুলগুলো আমি ইতিমধ্যেই বিক্রি করে দিয়েছি' উত্তর দিল ডেলা।

আজ বড়দিন, আসো আনন্দ করি। হতে পারে আমার কয়েগুচ্ছ চুলই গেছে, কিন্তু তাতে কি?'

ডেলা হঠাৎ করে অতি আদুরে গলায় জিমের মুখোমুখি হয়ে বললো, আমার চুল গুলো গণনা করা যাবে কিন্তু পৃথিবীর কেউ তোমার প্রতি আমার ভালবাসার গভীরতা কখনো পরিমাপ করতে পারবে না।'

আমি কি তোমার জন্য মাংশের বড়া গুলো নিয়ে আসবো?' জিমকে চুলের কথাটি ভোলাতেই জানতে চাইলো ডেলা।

ঘোরটা কেঁটে যেতেই জিম স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলো। সে ডেলাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আমাকে ভুল বুঝ না, ডেল', জিম বললো। আমি মনে করি না চুল কাটার বাহারী ডিজাইন, মুখ সুন্দর করে শেভ করা কিংবা একটি পছন্দের শ্যাম্পু কখনো আমার প্রিয়তমাকে কোন পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু তুমি যদি প্যাকেট-টা খোল তাহলে বুঝতে পারবে কেন আমি কিছু সময়ের জন্য নির্বাক হয়েছিলাম। জিম ওভারকোটের ভেতর থেকে একটি প্যাকেট বের করে টেবিলের উপর ছুড়ে দিল।
সাদা নরম আঙ্গুল দিয়ে ডেলা প্যাকেটটি খুলল। তারপর ডেলার আনন্দে অতি উৎসাহী চিৎকার; তারপর, হায়!! মেয়েলি কণ্ঠটি তাৎক্ষণিক পরিবর্তিত হয়ে যেন মৃগী রোগীর কান্নায় ও বিলাপে পরিণত হল।  

চিরুনিগুলো চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে - সব গুলো চিরুনি। এমন চিরুনির জন্য ডেলা দিনের পর দিন জানালার দিকে চেয়ে চেয়ে কত আরাধনা করেছে। চমৎকার সুন্দর চিরুনি, কাছিমের খোলক দিয়ে তৈরী আর রত্ন খচিত, এগুলো সুন্দর চুলের জন্য আদর্শ। এগুলো নিশ্চিত খুব দামী চিরুনি।' ভাবলো ডেলা। এগুলোর জন্যে কত দিন সে স্বপ্ন দেখেছে, এক সময় সে আশাই ছেড়ে দিয়েছিল। অবশেষে এগুলো তার হয়েছে।
যে গাছগুলো সুন্দর করে সাজানো উচিত ছিল সে গাছ গুলোই আজ নেই।   

ডেলা চিরুনি গুলোকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে রাখলো; আর জিমকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরলো যাতে তার চোখের দিকে সরাসরি তাকাতে পারে। তারপর বলল, আমার চুল তাড়াতাড়িই বড় হয়ে যাবে! জিম!

তারপর ডেলা বিড়ালের মত লাফ দিয়ে উঠে কাঁদতে শুরু করলো, উহ! উহ!!

জিম তখনো তার সুন্দর উপহার-টা দেখেনি। ডেলা খুশি মনে জিমের জন্য কেনা গিফট বের করে হাতের তালুতে রাখলো। মূল্যবান ধাতুর তৈরি ঘড়ি ঝোলানোর শেকলটির ঔজ্জ্বল্য চারদিকে ছড়াতে লাগলো।
দেখ, এটা সুন্দর হয়েছে না, পুরো শহর খুজে এটা আমি তোমার জন্যে কিনেছি। তুমি এখন দিনে শতবার ঘড়ি দেখবে। তোমার ঘড়িটি আমায় দাও। আমি এখন দেখব, তোমার ঘড়ির সাথে শিকলটি কেমন মানায়
তার কথা মত কিছু না করে জীম কাউচে ধপাস করে বসল।  তারপর হাসিমুখে পেছনের দিকে হাতটি বাড়িয়ে দিল।
ডেলা, চল আমরা দু'জনে আমাদের বড়দিনের উপহার গুলো দূরে সরিয়ে রাখি এবং এগুলো এতটাই সুন্দর যে, শুধু বড়দিনের উপহার হিসাবে এগুলোকে মানায় না'

আমি ঘড়িটি বিক্রি করে দিয়েছি তোমার চুলের জন্য সুন্দর চিরুনি কেনার টাকা জোগাড় করতে।'

এখন চপের ব্যবস্থা করতে পার' সাথে যোগ করল জিম।

চলো দশ সেকেন্ডের জন্য আমরা কিছু বুদ্ধিমান পরীক্ষার সাথে বিবেচনা করি অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে যাওয়া বিষয়টিকে অন্য প্রেক্ষাপট থেকে।

সপ্তাহে আট ডলার কিংবা বছরে মিলিয়ন ডলার - পার্থক্য কী? একজন গণিতবিদ অথবা একজন বুদ্ধিমান মানুষ তোমাকে যে উত্তরটি দেবে তা ভুলও হতে পারে। ম্যাজাইরা অনেক মুল্যবান উপহার আনেন, কিন্তু এগুলো তাদের নিজেদের জন্য নয়; এই গাঢ় সত্যটি পরে উদ্ভাসিত হয়।

তুমি কী জানো, 'ম্যাজাইরা হলো খুব জ্ঞানী; বিষ্ময়কর রকম জ্ঞানী মানুষ। যারা বড়দিনে ম্যানজারের শিশুটির জন্যে উপহার নিয়ে এসেছিলেন। তারাই সর্ব প্রথম বড়দিনে উপহার দেওয়ার প্রথা চালু করেছিলেন। নির্দিধায় বলা যায় এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল।' কি বলো তুমি?

আর আজ আমি শিখলাম দু'টি বোকা শিশুর মত দু'জন মানুষের গতানুগতিক কাহিনী; যারা একই ফ্লাটে বসবাস করে অথচ বোকার মতো তাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদটি একে অন্যের জন্য বিসর্জন দিল; কিন্তু কারো কোন উপকারে আসলো না।

তবে সব শেষে বলা যায়, আজকের দিনে যারা উপহার দেবে তাদের মধ্যে এই উপহার গুলোই সর্বোৎকৃষ্ট, এতে কোন সন্দেহ নেই। যারা আজকের দিনে উপহার দেয় এবং অন্যের কাছ থেকে উপহার পায় এরা সবাই জ্ঞানী; সর্বত্রই তারা মহাজ্ঞানী। তারাই ম্যাজাই। 


                      -----শেষ-----



মারুফ মাহমুদ 


ঢাকা কলেজ

3 comments: