Total Pageviews

Monday, January 27, 2020

Speech on the East India Bill - Edmund Burke - Bengali Translation - Part - 3 of 7

Speech on the East India Bill - Edmund Burke - Bengali Translation - Part - 3
পর্ব ২ লিঙ্ক
Speech on the East India Bill - Edmund Burke - Bengali Translation - Part - 3
স্পিচ অন দ্য ইস্ট ইন্ডিয়া বিল – এডমান্ড বার্ক - বাংলা অনুবাদ - পর্ব ৩ঃ  

আজ যদি আমরা ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত হই, তবে অরাং অটাং, বাঘ-ভালুকের যুগের চাইতে আমাদের গৌরবহীন যুগ যে এর চাইতে ভালো কিছু ছিল না এটাই বলার থাকবে আমরা ছেলেদের ভারতবর্ষে পাঠাই -যাদের আমরা স্কুলে বেতাই অথবা যারা বর্শা টেনে নিয়ে যায়, ডেস্কে মাথা নিচু করে থাকে তারা তাদের চেয়ে কোনো ক্রমেই ভালো নয় ভারতবর্ষকে ইংরেজ তরুণেরা যথার্থ সহ্য করার পূর্বেই তারা রাজ্যের ক্ষমতার চুমুক পান করে যেহেতু নীতিগতভাবে পরিপক্ক হওয়ার পূর্বেই তাদের সৌভাগ্যে পূর্ণ হয়ে ওঠে, তাই তাদের অতিরিক্ত ক্ষমতা থেকে উদ্ধার করার কোনো ক্ষমতা থাকে না
ভালো মনগুলোর এই আচরণের ফলশ্রুতিতে (অনেকেরই তাই হয়) তৈরি হয় অনুতাপ আর সংশোধন দ্রুত চলে যাওয়া সম্ভব হয় না তাদের লুণ্ঠিত দ্রব্য চলে যায় ইংল্যান্ডে আর ভারতবর্ষের কান্না ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায় সমুদ্রে, বাতাসে প্রতিটি মৌসুমি বাতাস বয়ে নিয়ে বেড়ায় অনেক দূরে, নিঝুম কোনো সাগরে ভারতে অপকর্ম করে সৌভাগ্য গড়ে তোলে আর তা দেখায় ইংল্যান্ডে ইংল্যান্ডে গিয়ে বংশানুক্রমিক বড়লোক হওয়ার পুণ্য হয়ে দাঁড়ায় একটি সাম্রাজ্যের সম্রান্ত আর অভিজাত সম্প্রদায়কে নির্মূল করে ইংল্যান্ডে এসে সবচাইতে ভালো শ্রেণী, রুচি আর আতিথেয়তার আবাসভূমি বলে মনে করে এখানে উৎপাদনকারী এবং কৃষকেরা প্রসংসিত হবে যথার্থভাবে, যারা কৃষি উৎপাদন তাঁত থেকে কাপড় তেরি করেছে বাংলার কৃষক চাউল এবং লবণ উৎপাদন করেছে তার জন্য তৈরি করেছে এবং ভুলেও গেছে যে সে তাকে অত্যাচার করেছে তারা আপনার পরিবারে বিয়ে করে তারা আপনার সিনেটে প্রবেশ করে; তারা লোন দিয়ে আপনার সম্পত্তির উন্নতিতে সহায়তা করে নানা প্রকার দাবি তুলে অবস্থার উন্নতি করে তারা কামনা করে এবং আপনার সম্পর্ককে ধারণ করে যা আপনার অনুগ্রহে কষ্টের সঞ্চার করে এই রাজ্যে এমন বাড়ি কমই পাওয়া যাবে যারা আমাদের পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের উপরিপড়া এবং ঘৃণা উদ্রেককারী সংস্কার নিয়ে আগ্রহ এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করছে না মোটের ওপর অসন্তোষজনক প্রচেষ্টা এই প্রচেষ্টায় আপনি তাদের কষ্ট দিচ্ছেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে যদি আপনি সফল হন, আপনি তাদের রক্ষা করবেন, যারা আপনাকে এতটা ধন্যবাদ দিতে পারবে না এসব জিনিস দেখাচ্ছে আমাদের হাতে একটি কঠিন কাজ আছে, কিন্তু কাজটির প্রয়োজনীয়তাও বোঝা যাচ্ছে আমাদের ভারতীয় সরকারই সবচাইতে বেশি দুঃখের কারণ সংশোধন প্রক্রিয়া আসাধারণভাবে সতেজ হতে হবে কাজের লোকেরা হবে আশাবাদী, উদ্যমী এবং আবেগপ্রবণ এটা একটা কষ্টকর কাজ যে, ক্ষমতার অপব্যবহার আপনার দেশে শুরু হয়েছে আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যাদের আমরা অপরিচিত মনে করি
আমি এই মানসিকতায় নিজেকে পরিবর্তন করার প্রয়াস নেব ব্যাপারে আমি সচেতন যে, মানুষের অনুভূতির ব্যাপারে শীতল বর্ণনা একদিকে যেমন আমার নিকট ভনিতা মনে হয় অন্যদিকে এটা ন্যায়নীতির বিরুদ্ধে এই সত্য কথা বলার জন্য এবং আমার ধারণার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি মানুষ কিংবা বস্তু বিশেষণ ব্যবহারের ব্যাপারে আমি যত্নশীল বলা হয়, প্রকাণ্ড অপরাধগুলো এমন শীতলভাবে বর্ণনা করেছেন ট্যাসিটাস এবং ম্যাকিয়াভেলি, তাদের অপছন্দ করার কিছু নেই মনে হয়, তারা ক্ষমতার নিষ্ঠুর প্রয়োগ বিষয়টি বর্ণনায় পণ্ডিত ব্যক্তি তারা পাঠকের মনকে ঘৃণা হিংস্রতা দিয়ে কলুষিত করেননি, যা সাধারণত ঘৃণা হিংস্রতার বিষয়বস্তুর মধ্যে থাকে স্যার, আমরা ভারতীয় বিষয়বস্তু সম্পর্কে কমই পরিচিত অত্যাচারের উপাদানগুলো এত কঠিন যে বোঝা কঠিন কষ্টপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামও আমাদের নিকট এত অদ্ভুত অপরিচিত যে এদের ওপর সহানুভূতি নিবদ্ধ করাও কঠিন হয়ে পড়ে আমি নিশ্চিত যে আমরা যে তথ্য পেয়েছি সেই তথ্যের ওপর নিশ্চিত ধারণা নিয়ে কমিটি রুমের সিঁড়ি বেয়ে এসেছি যথাযথ ভাষায় আমাদের মনোভাব প্রকাশ করতে হবে সেই সব ভদ্রলোকদের কাছে যারা এই বিষয়গুলোতে প্রবেশ করতে প্রস্তুত নয় তাদের কাছে আমাদের কথাগুলো মনে হবে নিরস, বেসুরো, হিংসাত্মক, দায়িত্বহীন যদিও আমাদের ভাষা ব্যবহার তা নয় এই পরিস্থিতি আমি স্বীকার করি, কোনো ক্রমেই ভারত শাসনের উপযোগী নয় আমরা এখানে সার্বভৌম ব্যবস্থাপক দ্বারা নির্দেশিত হয়ে এসেছি এই পরিস্থিতিতে সবচাইতে ভালোটাই আমরা করব
পরিস্থিতি মানুষের কর্তব্য নিয়ন্ত্রণ করে যে পরিকল্পনা আমি পেশ করেছি বিনীতভাবে, আমি সেখানে ফিরে আসছি সেইসব জাতি যারা কোম্পানির পরোক্ষ শাসনাধীন, তাদের প্রতি কোম্পানির আচরণের যথাযথ বিবেচনা করছি তাদের মধ্যে প্রধান হচ্ছেন অযোধ্যার নবাব [আসাফ আল দৌলা] আমার যথার্থ সম্মানিত বন্ধু যার কাছে এই সংশোধনী বিল পেশের জন্য ঋণী, তিনি একটি রিপোর্ট দেখিয়েছেন, যে সময়ের কথা উল্লেখ করেছেন সে সময়ে ওই নবাবের অবস্থা কী ছিল [১০ম সিলেক্ট কমিটির রিপোট ফক্সের উল্লেখ] আমি শুধু কিছু পরিস্থিতি যোগ করব যাতে সকলের ধারণায় জাগ্রত হতে পারে কীভাবে সাধারণ মানুষের অবস্থা ওই নবাবের অবস্থার সাথে পরিবর্তিত হতে পারে কীভাবে তার ভাগ্যের সাথে জড়িত যখন আমরা একজন নবাবের কষ্টের কথা বলি, একজন ব্যক্তির কষ্টের কথা বলি না, বরং এই সাথে ছোট-বড় সকলে কষ্টে জড়িয়ে পড়ে সেই কথাই বলি
১৭৭৯ সালে অযোধ্যার নবাব ব্রিটিশ প্রতিনিধির মাধ্যমে আদালতে জানান, তার রাজ্যে কিছু ব্রিটিশ সৈন্যের উপস্থিতিতে তার অসুবিধা হচ্ছে যেহেতু কোম্পানি তার রাজস্ব কমিয়ে দিয়েছে, তার দেশকে দুর্বল করে দিয়েছে, অতএব চুক্তি দ্বারা যা বাধ্য নয় তার চাইতে বেশি সৈন্য রাখতে বাধ্য নয়
আমি সামান্য একটু তার বক্তব্য শোনাব, যদি অনুমতি দেন তিনি বলেন, “ বছর অত্যধিক খরার কারণে চাষবাস বন্ধ ছিল তাদের কয়েক লক্ষ টাকা খাজনা মাফ করতে হয়েছে, এতেও তারা সন্তুষ্ট নয় [যারা অযোধ্যাকে ইজারা দিয়েছিল, নির্ধারিত সময়ে তারা অর্থ প্রদান করতে পারোনি এতে কয়েক লক্ষ টাকা ঘাটতি হয়] তারপর তিনি তার নিজের, তার পরিবারের এবং তার আশ্রিত(প্রজা)দের দুঃখের কথা বলেন এবং যোগ করেন, “সদ্য সংগঠিত সেনাবাহিনী আমার সরকারের জন্য শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয়, বরং রাজস্ব, সামাজিকতা উভয় দিক থেকেই ক্ষতিকারক
ইউরোপীয়ান সেনাকর্তা সমন্বিত এই বিগ্রেড নিজেকেই প্রভু মনে করে এবং আমার সরকারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে [ওয়াজিরের সেনাবাহিনীতে বৃটিশ প্রভাব বাড়ছিল ১৭৭৫ সালে কোম্পানির সেনাবাহিনীতে এর একটি অংশ অন্তর্ভুক্ত হয় অন্য অংশ বৃটিশ অফিসারদের অধীনে যায়] মি. মিডলটন [ন্যাথানিয়াল মিডলটন] মি. হেস্টিংসের বিশ্বস্ত রাজপ্রতিনিধি, শপথ করে বলেন, “আমি উদ্বিগ্নভাবে স্বীকার করছি যে, এই আবেদনের পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি আছে ভিজিয়ার (অযোধ্যার নবাব)-এর সমগ্র রাজ্যেই এই দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে বিষয়টি সম্পর্কে সকলেই জানে পরিস্থিতি এতই খারাপ যে ভালো-মন্দ কোনো ব্যক্তিই নবাবের সরকারের সাথে কৃষিকাজের কোনো চুক্তিই কেউ করবে নাঅতঃপর তিনি ব্যাপক দুর্যোগের এবং ফলাফলের বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরেন
এখন দেখতে হবে, দুর্যোগপীড়িত জনগণ যারা একদিকে মানুষ দ্বারা নির্যাতিত, অন্যদিকে ঈশ্বরের হাতে নির্যাতিত, তাদের সাহায্যের জন্য গভর্নর জেনারেল এবং তার কাউন্সিল কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে সকল সরকারই কঠোরতা শিথিল করে মি, হেস্টিংস বিষয়টি অস্বীকার করেন না বা ন্যূনতম সন্দেহও পোষণ করেন না মামলা ছিল তুচ্ছ এবং নেহায়েতই মূল্যহীন নির্যাতিত জনগণের পক্ষে একজন মহান নবাবের মামলায় মি. হেস্টিংস প্রচণ্ড রেগে যান, যেন তার কোনো আচরণ সম্পর্কে প্রশ্ন তোলাই অযৌক্তিক তিনি ঘোষণা করেন, “যে দাবি করা হয়েছে, যে স্তরে কথা বলা হয়েছে, যে ঋতুতে এটা করা হয়েছে সবই উদ্বেগজনক তাদের বিরোধিতায় অতিশয় কঠোরতা অবলম্বন করতে হবেনবাব এবং তার মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে তিনি অসংযত ভাষা ব্যবহার করেন তিনি ঘোষণা করেন, তার নবাবের বিরুদ্ধেশক্তিশালী সিদ্ধান্ত নেবেনফসল বিপর্যয়ের কারণে জরুরি এবং দ্রুত অভাবের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, “যারা খুব বেশি অভাব বোধ করছে তাদের জন্য সম্ভবত পর্যায়ক্রমে সাহায্য দেওয়ার জন্য সুবিধা বের করে নেব
এবং এদের বের করার প্রয়াস আমি নেবদুর্দশা এবং হিংস্রতা দূর করায় যাতে দ্রুত সিদ্ধান্তে সন্দেহ না হয়, সেজন্য তিনি বলেন, “এগুলো পর্যায়ক্রমে করা হবে এবং তার ফলাফল হবে দূর এবং আমি মনে করি সে এইগুলো অধিকারবলে দাবি করতে পারেবাস্তবিকই তার এই দাক্ষিণ্য দূরেই রয়ে গেছে এই দাবি প্রত্যাখ্যান (তার ভাষায় নবাবের নিকৃষ্ট আবেদন) করে তিনি সাধারণত যা করেন সেই একই দোষারোপ করে বলেন, তার সরকারে বিভাজন করতে চাইছে তিনি বলেন, “এটা আমার প্রচণ্ড ইচ্ছা যে (তাদের কোনো দাবি অন্য কোনো সময় মেনে নিতে পারি) তাদের দাবি সম্পূর্ণ এবং শর্তহীনভাবে নাকচ করে দিলাম এবং আমাদের মধ্যে যে গৃহবিবাদ করাতে সাহায্য করে তাকে শাস্তি দিতে আমার ক্ষমতা ব্যবহার করতে বিলম্ব করব না
এখানে, স্যার, রয়েছে ক্রোধ আর উত্তাপ মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যর্থ হয়ে তাদের দুঃখকষ্টের প্রতি যাদের বিবেচনা নেই আর সৈনিকজীবনের বৃথা পৌরুষত্ব দেখায়, এরা নেহায়েতই ঘৃণ্য জীব যে চিঠি সবকিছুর পর লিখেছে, স্বেচ্ছাচারিতার স্টাইলে এমন চিঠির কথা প্রাচ্যে শোনা যায় না সেনাবাহিনী রইলই ক্রমান্বয়ে সাহায্য প্রদানের এবং তারপর ফলাফল দূরে থাকার যে কথা বলা হয়েছিল তা দূরেই রয়ে গেল বাস্তবায়িত হল না দেশটি ধ্বংস হয়ে গেল মি. হেস্টিংস দুই বছর পর, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে এই বেপরোয়া সৈন্যজীবনের অসহ্য উচ্ছঙ্খলতা দূর করার প্রয়োজন অনুভব করলেন এই অবস্থাকে সুরক্ষা করার ছলে দেশটাকে সামরিক শাসনের মধ্যে রাখলেন মি. হেস্টিংসের ইচ্ছায় একটি নতুন চুক্তি হল আবার পুরনো পন্থায় পুনরায় ভঙ্গ করলেন [চুনার সন্ধি ১৭৮১ অযোধ্যার কোম্পানির সৈন্য সীমাবদ্ধ করা হল]
বেপরোয়া সৈন্যজীবন পুনরায় শুরু হল তার সকল কৌশলের ফলে মনে হয়, তার সফলতায় সে আশ্বান্বিত হয়ে উঠল তিনি আমাদের জানান, “ঘটনাপ্রবাহ আশা পরিবর্তন করে দিল নবাবের জন্য দুঃখ, দৈন্য এবং অসন্তোষ শুরু হল এবং আমার জন্য হতাশা এবং অপমান যে পন্থাই তিনি নিয়েছেন তাই তাকে হতাশা দিয়েছে তার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিম্নপর্যায়ের অযোগ্য, দীনহীন লোকজন নিয়োগ করা হয়েছে ফলে তার কোনো কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়নি অনেক জেলায় কোনো নিরাপত্তা ছিল না, কর্তৃত্ব ছিল না তাদের অনেকেই জমিদারদের কর্তৃক নিহত হয়েছেন সেই জমিদারদের শাস্তি তো হয়নি বরং আরো বেশি কতৃত্ব নিয়ে জমিদারি ধরে রেখেছেন অন্য জমিদাররা বিদ্রোহী হয়ে উঠে সরকারের কর্তৃত্বকে অপমান করেছে এবং তাদের শায়েস্তা করার ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি কোম্পানির ঋণ বিশেষ উৎস থেকে পরিশোধের কথা ছিল পরিশোধ হয়নি বরং চুক্তি করার সময় থেকে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে হাউজ সন্তুষ্ট
হবে জেনে যে, পরিচালকেরা ঋণ গ্রহণ করেছে তাদের নিশ্চিত দুর্লভ কোষাগার থেকে [কোম্পানির স্বচ্ছলতা প্রমাণ করতে গিয়ে পরিচালকেরা ওয়াজির থেকে পাওনা ,৮৯৪২৮ পাউন্ড, ১৯ শে নভেম্বর ১৭৮৩, ইস্ট ইন্ডিয়ার অবস্থা প্রবন্ধে উল্লেখ করে বার্ক ফিগারটি বাদ দেন] এটা মি. হেস্টিংসের নিজস্ব পরিকল্পনার নিজ বর্ণনা এই হচ্ছে দেশের অবস্থা যা আমাদের কাছে বলা হয়েছে পূর্ণ শান্তি শৃঙ্খলার কথা কৌতূহলের ব্যাপার হচ্ছে, সবকিছুই তার নিকট বলা হয়েছে, যেভাবে যা হয়েছে এবং সেভাবেই মানুষ দিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন কোম্পানির কৌশল নিয়ত এইরূপ, হয় তারা একজন রাজাকে বসায় যাকে তাদের সহায়তা ছাড়া রক্ষা করা ন্যক্কারজনক অথবা তারাই তাকে ন্যক্কারজনক করে ফেলে সরকারের কলকাঠি বানিয়ে এই ক্ষেত্রে তার কর্তৃত্ব রক্ষার জন্য বদান্যতার সাথেই সৈন্যবাহিনী পাঠানো হয় তার সাহায্যের অভাব হয় না একজন বেসামরিক ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান করা হয়, যাকে রেসিডেন্ট বলা হয় তাকে তার কোর্টে রাখা হয় সৈন্যদের বেতন দেওয়ার ছলে তার হাতে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয় তার পরিণামদর্শী ব্যবস্থাপনায় ঋণ বৃদ্ধি পায়, এই ঋণের জন্য নতুন বরাদ্দ দেওয়া হয় ধাপে ধাপে তার হাতে সকল রাজস্ব, এমনকি সমস্ত ক্ষমতা জড়ো হয় সেনাবাহিনীও যথার্থ প্রতিযোগিতা ছাড়া স্বাভাবিক উপার্জনকে বড় করে দেখে না তারা মনে করে, যে দেশে বেসামরিক সরকার প্রায়শই বিদ্রোহী হয়ে ওঠে, সেখানে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন রয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ডকে পুরস্কার দেওয়া হবেই দেশের বিভিন্ন ভূ-খণ্ড তাদের মর্জিমতো দান করা হয় তখন দেখা যায়, তাদের কর্মকর্তারা রাজস্ব উৎপাদনকারী কৃষকে পরিণত হয় অনেক বেতন পাওয়া বেসরকারি কর্মকর্তা আর অনেক পুরস্কার দেওয়া সামরিক কর্তাদের মাঝে এই দেশবাসীর অবস্থা কল্পনা করা কঠিন নয় নিয়মিত এবং আইনগত সরকারের কর্তৃত্ব প্রতি স্থানেই ম্রিয়মাণ অনিয়ম এবং হিংস্রতার জন্ম হয় আবার অনিয়ম হিংস্রতা দিয়ে অনিয়ম হিংস্রতা দমন করা হয় যখনই রাজস্ব সংগ্রহকারীরা, কৃষিসংক্রান্ত কর্নেল, মেজররা বিভিন্ন স্থানে যায়, তাদের আগে- পিছে বিদ্রোহ দেখা দেয় মানুষ দলে দলে দেশ থেকে পালায় সীমান্তে পাহারা দেয় সেনাবাহিনী, কোনো শত্রু ধরার জন্য নয়, বরং জনসাধারণের পালানো রোধ করার জন্য এইভাবে একসময়ের সমৃদ্ধশালী রাজ্যে যেখানে প্রতি বছর তিন কোটি সিক্কা টাকা, প্রায় তিন মিলিয়ন স্টারলিং-এর চেয়ে বেশি প্রদান করত সেখানে চার-পাঁচ বছরের মধ্যে তা নেমে হল তিনশত হাজার পাউন্ড, যা- খুবই রূঢ়ভাবে আদায় করতে হত সবকিছু শেষ করার পরে এই সংগৃহীত রাজস্বের প্রায় সবটুকু বেনারস (এই অঞ্চলের প্রাচীন ধন-সম্পত্তির অংশবিশেষ এখানেই কেবল ছিল)-এর সুদখোরের হাতে যেত বার্ষিক শতকরা তিরিশ ভাগ সুদে
এইভাবে রাজস্ব পড়ে যাওয়াতে তারা প্রভাবশালী লোকদের সম্পত্তি দখল করল পুনর্গ্রহনের নামে তারা ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল এইসব রাজ্যে, যে রাজ্যগুলো মিলিতভাবে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের সমান, কোনো অবস্থাসম্পন্ন লোক রইল না কোনো জমিদার, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী কিংবা যারা সবচেয়ে শেষ পর্যায়ে ধ্বংস হয় সেই অবস্থাপন্ন কৃষকও থাকল না একটি রাজ্য কোম্পানি রাজ্যে ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দ্বীপের মতো থাকল আমার যথার্থ সম্মানিত বন্ধু এই বিল উত্থাপনের সময় দেশীয় নবাব ফয়জুল্লাহ খানের দোষ, শাস্তি সম্পর্কে তুলে ধরেছেন [ফয়জুল্লাহ খান (মৃ. ১৭৯৪) ১৭৭৪-এর অভিযানের পর রোহিল্লা প্রধান ফয়জুল্লাহ খানকে রামপুরায় একটি জায়গীর দেওয়া হয় কোম্পানির জন্য তাকে বিশেষ অবদান রাখতে হয়] এই ব্যক্তি নীতি এবং শক্তি উভয়ই প্রয়োগ করে নিজেকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ধ্বংস থেকে রক্ষা করেন একটি চুক্তি (যদি এটাকে চুক্তি বলা হয়) দ্বারা তিনি নিজেকে নিরাপদ রাখেন আপনাদের কাছে বলা হয়েছে, যা এই দুর্ভাগা ব্যক্তি সম্পর্কে তার শত্রুরাও বলে, এর পুরো রাজ্য অর্থাৎ পুরো রোহিল্লা রাজ্য একটি বাগানের মতো, যা সাজানো হয়েছে, কোনো খুঁত নেই আরেক জন অভিযোগকারী বলেন, ফয়জুল্লাহ খান যদিও ভালো সেনা নন (এটাই হচ্ছে তার দুর্ভাগ্যের মূল কারণ), কিন্তু তিনি একজন ভালো অমিল [অমিল, রাজস্ব প্রশাসক]হিসেবে স্বীকৃতি পান এতেই অনুমান করা হয়, এতেই তিনি তার জনবল এবং সম্পদ দ্বিগুণ করেন অপর এক ভাষ্যে তার রাজ্যকে অযোধ্যা থেকে পালিয়ে আসা নির্যাতিত কৃষকদের আশ্রয় স্থান বলা হয়েছে এই একটি অপরাধে (মি. হেস্টিংস মনে করেন ওটা ছিল দেশদ্রোহিতার সামিল) তার রাজস্ব প্রতি বছর দেড় হাজার পাউন্ড বাড়িয়ে দেওয়া হল
ডা. সুইফট কোথাও যেন বলেছেন, কোনো ব্যক্তি ঘাসের দুটো পাতা উৎপন্ন করার পূর্বেই কেবল একটি পাতা তৈরি করে ফেললওই ব্যক্তি পৃথিবীর সকল রাজনীতিবিদ থেকে ভালো [গ্যালিভার ট্রাভেল: ভয়েজ টু ববডিং নাগ] এই নবাব যিনি মানুষের কল্যাণকামী, এইসব গুণের জন্য কোম্পানি সরকার তাকে প্রতারক, ডাকাত, বিশ্বাসঘাতক হিসেবে আখ্যায়িত করে যে মুহূর্তে তাকে বিদ্রোহী হিসেবে ঘোষণা করা হল সেই মুহূর্তে তাকে পাঁচ হাজার ঘোড়া প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হল দেরি করা হলে (টেকনিক্যাল বাক্যে যখন কোনো অভিযোগ উত্থাপন হয়) চুক্তি ভঙ্গকারী হিসেবে তার নিকট থেকে সবকিছু নেওয়া হবে, শুধু ঘোড়া নয় ফয়জুল্লাহ খানের রাজ্য মি, স্পিকার নরফোকের চাইতে ছাট সমুদ্র থেকে সাতশত মাইল অভ্যন্তরে কোনো উল্লেখযোগ্য বস্তু উৎপাদনকারী দেশ নয় এই রাজ্য থেকে বিভিন্ন সময় উল্লেখযোগ্য অর্থ ব্রিটিশ প্রতিনিধির নিকট পাঠানো হয়েছে ঘোড়ার দাবি মোটেই কোনো শালীন দাবি নয়, থেকে তিনশত হাজারে উঠে গেল, কম হিসেবে [প্রথম সংস্করণে : বৃটিশ প্রতিনিধিকে নিয়মিত প্রতি বছর ১৫০০০ পাউন্ড প্রদান করা হয়] বলা হয়েছে, সর্বশেষ ব্যক্তিকে পাঠানো হয় আলোচনার জন্য আলোচনায় বলা হয়েছে, দাবি মেটানো সম্ভব নয় উত্তরে বলা হয়েছে, এর চাইতে বেশি দাবি করা হবে নাতিনশত হাজার পাউন্ড প্রতি বছর [প্রথম সংস্করণে চারশত পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড] অথচ অভ্যন্তরস্থিত একটি রাজ্য নরফোকের চাইতে বড় নয়
সবচাইতে লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, অপরাধীকে তার গুণগুলির জন্য আত্মপক্ষ সমর্থন করতে হল যেন এগুলো তার সবচাইতে বড় অপরাধ তার উন্নতমানের চাষবাসের গুরুত্ব তিনি অস্বীকার করলেন জনসংখ্যার কথা অস্বীকার করলেন তিনি প্রমাণ করতে প্রয়াসী হলেন, তার রাজ্যে দরিদ্র কৃষকদের পাঠানো হয়েছে, তাদের তিনি আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছেন বিভিন্ন ধরনের জুলুম, অত্যাচার যার বর্ণনা আপনাদের জন্যও ক্লান্তিকর, আমার জন্যও বিরক্তিকর তারা ভাবল, “জোরপূর্বক আদায়ের ক্ষমতা দেওয়াই ভালো ব্যবস্থাঅতএব তারা সর্বশেষ ১৫০,০০০ পাউন্ড দাবিতে স্থির থাকল ভবিষ্যতে তিনশত হাজার পাউন্ড প্রদান থেকে অব্যাহতি দিল তার দারিদ্র্যের কথা বলে (সম্ভবত সত্য) তিনি তাদের নিরাপত্তা কিনতে অস্বীকার করলেন যদি তার ওজর সত্যি নাও হয়, আমার মতে তিনি কোম্পানির বিশ্বাস না কিনে জ্ঞানী কাজ করেছেন কম উপকারী চুক্তি করে তিনি প্রতারক হওয়ার চাইতে বিপজ্জনক জেদ এবং নির্মম দাবির কাছে আত্মসমর্পণ না করে বিরোধিতা করেছেন তারা ফয়জুল্লাহ খানকে উদাহরণ সৃষ্টিকারী শাস্তি দিল তার দেশের রীতির জন্য অকল্যাণ প্রতিরোধই ভালো রীতির জন্য বড় বস্তু, এটা মনে রেখে তারা তার অর্থভাণ্ডার নিঃশেষ করেছিল, যাতে অপরাধীর চাষ ভবিষ্যতে বৃদ্ধি না পায় তার রাজ্যের মানুষ যাতে কোম্পানি সরকারের জন্য ভৎসনা এবং নিন্দার কারণ না হয় সেজন্য তারা তাকে একটি যথার্থ চুক্তিতে বেঁধে নিলসেটা হল অযোধ্যা থেকে খাজনা না দিয়ে আসা কৃষকদের আশ্রয় দিতে পারবে না যথার্থভাবে যখন তারা তাকে এটা করিয়ে নিল, অতঃপর তাকে তথাকথিত সকল বিদ্রোহ, বিদ্রোহে ঈন্ধন, বিদ্রোহে স্বার্থ, বিদ্রোহের পথে প্রভৃতি সবকিছু থেকে মুক্তি দিল
এই কল্পিত বিদ্রোহ ছিল তাদের একটি হাতিয়ার যেখানে কোথাও অর্থ রাখা হয়েছে, অর্থের মালিককে বিদ্রোহের অপবাদ দেওয়া হয়েছে যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা অর্থ থেকে মুক্তি পেয়েছে, ততক্ষণ দেশদ্রোহ থেকে মুক্তি পায়নি অর্থ নিয়ে নেওয়া হলে সকল অপবাদ, বিচার এবং শাস্তি শেষ হয়ে যায় এটা এমন একটা বিষয় অথচ মহাপরিচালকের কোষাগারের হিসাব থেকে বাদ পড়ে যায়আমি বিস্মিত হই আমি নিশ্চিত যে, হিসাবে পরবর্তী সংস্করণে সরবরাহ করা হবে কোম্পানি এই হাতিয়ার পূর্ণরূপে সদ্ব্যবহার করে যখন তারা দু জন বৃদ্ধ মহিলাকে অভিযুক্ত করে, ইংরেজ জাতিকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার কথিত ষড়যন্ত্রের জন্য ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী দুজন মহিলা ইংরেজের সাথে অর্থ দিয়ে সন্ধি করে ইংরেজেরই নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকে বিদ্রোহে লিপ্ত থাকতে পারে বিশ্বাস্য নয় যেহেতু কোম্পানির টাকার দরকার, অতএব বৃদ্ধ মহিলা দু জন অবশ্যই ষড়যন্ত্রে জড়িত এবং বিদ্রোহের দোষে দোষী আর ধনসম্পত্তির দোষে দোষী সাব্যস্ত হয় [অযোধ্যার বিখ্যাত বেগম, যাদের যথা হেস্টিংসের ইমপিচমেন্টের সময় যথেষ্ট শোনা যায় ভূমি থেকে উদ্ভূত অনেক আয় তাদের কাছে ছিল ছাড়াও অনেক ধনরত্ন তাদের ছিল হেস্টিংসের চাপে অযোধ্যার মুখ্যমন্ত্রী তাদের কোষাগার থেকে পঞ্চান্ন লক্ষ টাকা উদ্ধার করেন তাদের জায়গীর বাজেয়াপ্ত করা হয় ঘটনায় সহিংসতা হয়]
দুবার তারা বড় রকমের ধনসম্পত্তি দুই মহিলার নিকট থেকে ছিনিয়ে নেয়, যেন অবশিষ্টবারও বৃটিশের অনুমতি রয়েছে একদল ব্রিটিশ সৈন্যকে একজন সামরিক কৃষক জেনারেলের নেতৃত্বে পাঠানো হল প্রাসাদ দখল করতে সেখানে এই মহিলারা থাকেন তাদের প্রধান খোজারা [বিহার আলী খান জওহার আলী খান] ছিলেন তাদের প্রতিনিধি অভিভাবক, রক্ষাকর্তা এবং সম্মানিত ব্যক্তি তাদের অন্ধকার ভূ-গর্ভে ফেলে দেওয়া হল ধনসম্পত্তি বের করে দেওয়ার জন্য সেখানেই তারা পড়ে রইল যে সকল জমি দিয়ে মহিলাদের ভরণপোষণ হত তারা সেই জমিগুলো দখল বাজেয়াপ্ত করল তাদের ধনরত্ন নেওয়া হল এবং একটি অজ্ঞাত জায়গায় ছল-চাতুরির নিলাম অনুষ্ঠিত হল ভদ্রলোকেরা যথার্থ মূল্যেই জিনিসগুলো কিনে নিল এগুলো বিক্রির কোনো সঠিক হিসাব দেওয়া হল না কী পরিমাণ টাকা পাওয়া যায় তা জানা যায়নি নষ্ট এবং পরিত্যক্ত জিনিসগুলো রক্ষার জন্য ওই ধরনের কিছু চুক্তি করা হয়
এখানে আমি স্মরণ করাতে চাই যে, ১৭৭৩ সালের আইন অনুযায়ী সকল কার্যবিধি নিষ্ঠাসহকারে প্রকাশ করতে হবে অথচ এখানে সকল আইনের অবমাননা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় কাগজের অর্ধেকই গোপন রাখা হয় ব্যাপারে আমি উল্লেখ করতে চাই, কী পরিমাণ লোকের ক্ষতি করা হয়েছে এবং যে প্রক্রিয়ার মধ্যে ক্ষতি করা হয়েছে এই বৃদ্ধ মহিলারা একজন হচ্ছেন অযোধ্যার নবাব মরহুম সুজাউদদৌলার মা [সাদরাল নেছা (মৃ. ১৭৯৬)], স্ত্রী [বহু বেগম (১৭২৮-১৮১৮)] যারা সম্মানের দিক থেকে ভারতবর্ষের মধ্যে প্রথম কাতারের সুজাউদদৌলা, মোগল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় ব্যক্তি এবং বিস্তৃত বর্ধিষ্ণু রাজ্যের অধিকারী ছিলেন তিনি এই নবাব যুক্তিসঙ্গতভাবে তার পুত্র এবং বংশধরদের [আছাফ আল দৌলা]প্রতি সন্দেহপরায়ণ হয়ে তার সমুদয় সম্পত্তি এবং পরিবার-পরিজন বৃটিশের জিম্মায় রাখেন এই পরিবার পরিজনের মধ্যে ছিল দুই হাজার মহিলা এর মধ্যে যুক্ত হয় নিকট আত্মীয়দের মধ্য থেকে আরো দুটো পরিবার আমি যতটুকু জানি, এদের মধ্যে প্রায় চার কুড়ি বাচ্চা-কাচ্চা, খোজাসহ অনেক পুরনো কর্মচারী এবং কাচারির অনেক পুরনো আশ্রিত ব্যক্তি সকল আশ্রিতদের ভরণপোষণ এবং ভবিষ্যৎ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে গেছেন তার রেখে যাওয়া জমি এবং ধনসম্পদ থেকে এই লুটের মাল সম্পর্কে যদি বলি, সুজাউদদৌলার সম্পত্তি ধ্বংস করার জন্য হেস্টিংস ব্যবহার করেন তার ছেলে বর্তমান নবাবকে এই ছেলের পবিত্র হাতকে ব্যবহার করা হয় মা দাদীমার ভাইদের এবং অন্যান্য আশ্রিতদের সম্বল ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য (এই পর্যায়ে কিছু তরুণ সদস্য হেসে ওঠেন, হাসি সময়োপযোগী এবং সময়টা সুন্দর যথার্থ) শেষ নির্দেশের পরও কিছু অর্থ অদেয় ছিল মহিলারা হতাশ হয়ে ফের দিতে অস্বীকার করল মি. হেস্টিংস এবং তার সভাসদগণ ছিলেন অনড় এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তারা রেসিডেন্টকে জানালেন পুত্রকে উত্তেজিত করার জন্য, যাতে সে পৈতৃক দায়িত্বের শেষটুকুও পালন করে আমরা মনে করি, রেসিডেন্টকে এক চিঠিতে তিনি লেখেন, আপনি আমাকে জানাবেন ফৈয়জাবাদের [ফয়েজাবাদ : অযোধ্যার ভূতপূর্ব রাজধানী]বেগমের নিকট থেকে অবশিষ্ট অর্থ আদায়ের জন্য কী করেছেন এবং প্রয়োজন মনে করলে আপনি নবাবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলুন
সম্ভ্রান্ত বংশীয় কতিপয় মুসলিম নারীর দাবি আদায়ের জন্য কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তা আমি কয়েক মিনিটের মধ্যে বলব, যখন আমি আপনাদের নিকট অপর একটি ষড়যন্ত্র এবং বিদ্রোহের কথা বলব, যা সাধারণত ভারতবর্ষের লুক্কায়িত ধন-সম্পদের জন্য প্রায়ই ঘটে থাকে
বেনারস হচ্ছে ভারতের ধর্মরাজ্যের রাজধানী এটা একটা বিশেষ ধরনের পবিত্র জায়গা মুসলমানদের মক্কায় হজ করার মতোই হিন্দুরাও জীবনে একবার হলেও এখানে তীর্থযাত্রা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে এই শহরের জন্য ছিল শ্রদ্ধাভক্তি প্রতিটি যুদ্ধ, সহিংসতায় এখানে ছিল সকলের জন্য নিরাপত্তা, যা সর্বাধিক নিরাপত্তা সংবলিত, শাসনতন্ত্র যা দিতে পারে না ফলে শহরটি ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠল পুরো রাজ্যটিই সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠল আর নগরটি হল রাজ্যের রাজধানী অন্যান্য স্থানের চেয়ে টাকার সুদ অর্ধেকের চেয়ে বেশি গাজীপুর রাজ্যের অন্তর্গত এই নগরীর তথ্যাবলির রিপোর্ট পেশ করেছি, যা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সার্বভৌমত্বের মধ্যে এসে পড়ে। 
                                     পরের পর্ব

No comments:

Post a Comment