Total Pageviews

Thursday, April 4, 2019

The Rape of the lock - Alexander Pope - Canto 4 - Bangla Translation - দি রেপ অব দি লক - ৪র্থ সর্গ বাংলা অনুবাদ

The Rape of the lock - Alexander Pope - Canto 4 - Bangla Translation 





চতুর্থ পর্ব -  দ্যা রেপ অফ দ্যা লক বাংলা অনুবাদ

মহা উৎকণ্ঠা আর অস্থিরতা ঘিরেছে বেলিন্দাকে
লুকানো এক গোপন আবেগে কাপে বক্ষ তার।
যুদ্ধবন্দী যুবক রাজাগণও লাভ করে দীর্ঘ জীবন,
বিলোল কটাক্ষের রমণীকুল রূপ ফুরালেও বেঁচে থাকে,
আবেগাপ্লুত নায়কেরা পেল না তৃপ্তি কোনো
চুম্বনপ্রাপ্তির আশা ছাড়ে বয়সী রমণীকুল
অত্যাচারী দুরাচার মরে পাপের অনুশোচনা বিনা
সিনথিয়ার আলগা বসন হয় যখন আলুথালু,
ওদের মাঝেও জমেনি এতটা ক্রোধ আর হতাশা
বেলিন্দা তোমার চুলের তরে তোমার মাঝে জেগেছে যেমন অস্থিরতা

এ বেদনাভারে অলৌকিক প্রহরীরা তার দূরে গেল উড়ে
অ্যারিয়েল ছেড়ে গেল বেলিন্দাকে অশ্রুসজল চোখে
বিষণ্ণতার প্রতীক ঘোর কালো আম্ব্রিয়েল
যার আগমনে শুভ্র আলোর মুখে লাগে কালিমা
বিষণ্ণ মেজাজের সেই দেবী খুঁজতে নিজের কৃষ্ণ আবলু
কালো পাতালের গহ্বরে গেল চলে।
কালিঝুলি মাখা পাখায় করে ভর নোম দ্রুত পালায়
আর বানায় চারপাশে কালো পর্দার আবরণ
উল্লাসের কোনো হাওয়া বহে না এই অঞ্চলে,

কেবলই শন শন শব্দে বয় পুবের হাওয়া।
হেথায় আছে বাতাস আড়াল করা এক গোপন ঘর
যেথায় কখনো পড়ে না দিনের আলোক,
বেদনাকাতর বেলিন্দা সে কক্ষের বিছানায় শুধু করে হা হুতাশ
শরীরের একপাশে ব্যথা তার, মাথায় বেদনাভার।
একই রকম দুজন সেবিকা ঘিরে আছে বেলিন্দার সিংহাসন
কিন্তু চেহারায় একেবারেই ভিন্নমাত্রার দুজন
একপাশে দাঁড়ানো জটিল স্বভাব বৃদ্ধা কুটিলা নারী
চামড়া কুঁচকে তার প্রকাশে সাদা কালো ডোরা;
মধ্য দুপুরে আর সারা রাত জেগে করে প্রার্থনা
জপমালা হাতে তার, অন্তরে কুটিলতা
অন্য পাশের কৃশকায় সেবিকা যেন এক ভাঁড়
পরনে যুবতীর সাজ গালে তার গোলাপি আভা
একপাশে ঘাড় কাত করে মুখে বিড়বিড় করে
একটু হাওয়ায় মূর্ছিত হয়, হয় দর্পচূর্ণ তার
বেদনাভার বুকে ডুব দেয় বিচিত্র কাথায়
শরীরে জড়িয়ে গাউন অসুস্থতার করে ভান।
রূপসীদের মাঝে দেখা যায় এ রোগের প্রকোপ
তখন প্রতিটি রাত্রিবাস নতুন নতুন ব্যাধি করে সৃজন।

ব্যথিত হা হুতাশ ওঠে প্রতিদিন প্রাসাদশীর্ষ হতে
বেদনার সে দীর্ঘশ্বাস হতে বের হয় কিম্ভূত অপচ্ছায়া,
কুটিরে সন্ন্যাসী যেমন দেখে ভয়াল খোয়াব
কিংবা মুমূর্ষু রূপসী নারীর ভাবনার মতো
কখনো হিংস্র ডাকিনী, কখনো কুণ্ডলী পাকানো সাপ
সাদা ভূত আর বহিশিখার রক্তিম মুখব্যাদান
কখনো প্রকাশে সোনালি পানির নদী স্বীয় দৃশ্যরাজি
দেখা যায় কাচের গম্বুজ আর স্বর্গদূতদল।

চারপাশে ঘিরে আছে কত নর-নারী
বেদনাতুর ক্ষণে তাদের প্রকাশে কত না ভিন্ন রূপ।
প্রাণ পায় সেথা চায়ের কেটলি এক হাত বাড়ানো
গুটানো অন্য হাত, হ্যান্ডেল আর নল সেটাই দেখায়;
হোমারের ইলিয়াড খ্যাত একটি মাটির পাত্র করে হাটাচলা
একটি জগ ফেলে দীর্ঘশ্বাস, একটি হাতল কথা বলে
ভাবনার জটিলতায় মানুষ হয়ে যায় শিশুর মতো
কুমারীরা বোতল ঘিরে ছিপি লাগানোর তরে করে আর্তচিৎকার।

এইসব অকল্পনীয় দৃশ্যাবলি পার হল আম্ব্রিয়েল
হাতে নিয়ে হিংসা প্রশমনের ওষধি গাছ নিরানন্দ ক্রুদ্ধ মেজাজে
অতঃপর বলে সে নিরানন্দের রানীকে, চলে এসো বিভ্রাস্তের রানী
পনেরো হতে পঞ্চাশের রমণীরা থাকে যার আওতায়
ক্রুদ্ধ মেজাজ আর রমণীসুলভ কুটনীর পিতা মাতা
যেখানে সৃষ্টি হয় বারবার অচেতনা আর কাব্যের উল্লাস
মানসিক চেতনার ঘটে কত না উদ্ভাস
কাউকে শেখাও হেকিমি বিদ্যা কাউকে বানাও নাট্যকার,
তোমারই জন্য অহঙ্কারীদের গতি হয় ধীর,
আস্তিকজনদের যন্ত্রণা দাও যেতে প্রার্থনা সভায়
গারীয়সী রূপবতী আছে একজন যে তোমার শক্তিকে করে হেয় জ্ঞান
অসংখ্য জনকে মত্ত রাখে সদা উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনায়
আহা, তোমারি দূতরূপে যদি পারি করতে কোনো রূপের বিনাশ
যদি দিতে পারি সুরূপের মুখমণ্ডলে ব্রণের বিস্তার
রক্তিম গাল করে দিতে পারি জলের মতন
তাসের আসরে বদলে দিতে পারি মুখের আভা,
আমি পারি অসতী নারীদের স্বামীকুলের মাথায় শিং গজাতে
করতে পারি আগোছালো পেটিকোটের ফাস, আলুথালু বিছানা
তাদের মনে জাগাতে পারি বিনা কারণে সন্দেহ
কোনো রমণীর এলোমেলো করে দিতে পারি মাথার বসন,
অথবা, লোলুপ কুকুরকে ভোগাতে পারি বদহজমের ব্যাধিতে
ডাগর আঁখির অশ্রু যাকে পারে না ফেরাতে
শোনো বেলিন্দার মাঝে জাগাও বিষণ্ণতা আর ক্রোধ
তার ক্রোধেই ডুবে যাবে অর্ধেক জগৎ।

প্রথমে জানালেও তাঁর তীব্র অসন্তোষ
শেষে নোমের প্রার্থনা করল পূরণ।
দু'হাতে রাখল চেপে অবাক করা এক থলে
এই সেই থলে যাতে ইউলিসিস বাতাসকে করেছিল বন্দী,
সকল রমণীর ফুসফুস জড়ো করেছে এই থলেতে
বন্দী করেছে দীর্ঘশ্বাস, ফুসফুস, ক্রোধ আর জিহবার ধার
মূর্ছা ভীতি আটকেছে ক্ষুদ্র একটি পাত্রে
সাথে মৃদু ব্যথা, বেদনাভার আর যত অশ্রুজল।
খুশিতে ডগমগ আম্ব্রিয়েল হতে এইসব পেয়ে
কালো পাখা বিস্তার করে দিল উড়াল পর্বত পানে।
খান্ডার নারীদের রানীর হস্তে ধৃত রূপসীর দেখা পেল সে
কেশ তার এলোমেলো দৃষ্টিতে তার হতাশা
ওদের মাথার ওপরে আম্ব্রিয়েল তার থলে দিল খুলে,
অকস্মাৎ দ্রুত ফেটে পড়ল সব রুদ্র রোষ।
বেলিন্দা করল আর্তনাদ অমানসিক বেদনায়
থেলেস্ট্রিসের ইন্ধন দেয়া ভয়াল অগ্নিতে ভীত হল সে।
অভাগী মেয়ে, হাত বাড়িয়ে বলল থেলেস্ট্রিস, বেলিন্দা ভেঙে পড়ল কান্নায়
আর হ্যাম্পটন প্রাসাদে প্রতিধ্বনিত হল, হায় অভাগী মেয়ে,
এতটা যত্ন করেছিলে কি তুমি এই ভয়াল পরিণতির তরে
মেখেছিলে কত না সৌরভ, চুলে গুঁজেছিলে কাঁটা?
ফিতেয় বেঁধেছিলে কি কেশ এরই তরে,
এরই তরে কি কাটা দিয়ে চুলে গেঁথেছিলে পুষ্পরাজি?
এত যত্নে গড়া মাথা কি এই পরিণতি তরে
কত না ধৈর্যে বহন করেছ কেশে এইসব সাজসজ্জার ভার!

হে কর্তনকারী, দেখাবে কি তোমার কর্তিত কেশরাশি।
ফিটফাট ভদ্রেরা জ্বলবে ঈর্ষায় আর রমণীরা তাকাবে ফ্যাল ফ্যাল করে
শপথ সম্মানের, শপথ সম্মানের, পবিত্র আলয়ের
রমণী তার যৌন কামনার তরে বিলাসব্যসন সব ত্যাজিতে পারে।
হয়ত আমি পরিমাপ করেছি তোমার অশ্রুজল,
শুনেছি ওদের কণ্ঠে ভয় ধরানো সব শব্দাবলি
তোমায় লাগছে তখন পুড়ে যাওয়া রুটির মতোই
সবার ফিসফিস কানাকানিতে বিনষ্ট এখন তোমার সকল সুনাম।
তোমার এই দলিত সুনামকে কেমনে ফিরাব আমি?
তোমার পক্ষে গেলে মোর হয়ে যাবে বদনাম,
তোমার এ ক্ষতি হবে না পূরণ কোনো দিন
স্পষ্টরূপে ধরা দেবে তা সবার নয়নে
হীরের দীপ্তির মতোই তা হবে আরো গভীরতর
আর সেই সংহারকারীর হাতে তা দীপ্তি পাবে চিরকাল?
হাইড পার্কে যখন গজাবে ঘাস
নাগরেরা সেথায় হবে জমা রঙ্গিনীদের আহ্বানে
জগৎ আর হাওয়ারা হঠাৎ ডুব দেবে সমুদ্রজলে
মানব, বানর, লোলুপ কুকুর, পারাবত সবই হবে নির্মূল।

এত সব বলে সে ক্রোধে ছুটে গেল স্যার প্লিউমের কাছে
আর তার নায়ককে বলল কাটা কেশ দিতে ফেরত
হলুদাভ নস্যির পাত্র হাতে ধরা স্যার প্লিউম
মেঘের রঙের বেত্রদণ্ড ঘুরালেন চারপাশে
গ্রহী নয়ন আর বেঢপ গোল চেহারা নিয়ে
প্লিউম খুললেন নস্যির পাত্র, এরপর যত নালিশ
চিৎকার করলেন জোরে, ওহে প্রভু, কোন শয়তান দুরাচার
এ কী অনাচার কেশগুচ্ছে, আপনাকে অবশ্যই ভদ্র হতে হবে।
কেশগুচ্ছে আক্রমণ এটা নয় কৌতুক কিংবা যৌন অত্যাচার
বেলিন্দাকে ফিরিয়ে দেন তার কেশ, অতঃপর বদ্ধ হলো নস্যির পাত্র তার।

বললেন জবাবে পিটার, বড়োই ব্যথিত আমি,
আপনি তো ভালোই বলেন, এখন বললেন আবোল তাবোল,
কিন্তু আমি শপথ করছি এই পবিত্র চুলের নামে
এই কাটা কেশ মাথায় তার লাগবে না কোনোকালে,
আর এ সম্মানহানির হবে না কোনোই প্রতিকার
এ কেশগুচ্ছ ওই রূপসীর মস্তকে আর কখনো যাবে না ফিরে
যত দিন আমার নাসিকা নেবে নস্যির সুঘ্রাণ,
আমার এ হাতে চিরকাল ধৃত থাকবে রূপসীর কাটা চুল
বললেন তিনি গর্বের সাথে বিজয়ীর ভঙ্গিতে
হাতে ধরা তার রূপসী বেলিন্দার মহামূল্যবান কেশ।
ম্ব্রিয়েল করল না গ্রহণ তার বাণী
সে ভেঙে দিল একটি বোতল যা থেকে বেরোল শোক আর বেদনারাশি
এবার প্রত্যক্ষ করো রূপসীর বেদনার রূপ
অর্ধেক নয়ন তার তন্দ্রায় ঢুলে আধেক নয়নে অশ্রুজল;
কম্পিত সমুন্নত বক্ষে তার ঢুলে পড়া মাথা
মাথা তুলে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে বলে,
এই ভয়াল দিনটি অভিশপ্ত দিন হয়ে থাক চিরকাল
যেদিন আমার লুট হল সকল সম্পদ, কালো কেশ গেল সরে।
আহা আমি থাকতাম কত না সুখে, কত না আনন্দে
যদি আমি দুচোখে না দেখতাম হ্যাম্পটন প্রাসাদ,
রমণী হিসেবে শুধু আমি একাই পড়িনি ভ্রাস্তির জটাজালে
এই প্রাসাদের মায়ায় অনেকেই দুর্ভোগে পতিত।
আহা, যদি কেউ করত না বন্দনা মোর
সেথা বহু দূরে নির্জন দ্বীপে কিংবা দূর দেশে,
যেখানে যেত না সজ্জিত কোনো গাড়ি
যেথা, সুগন্ধি চা পান করে কেউ খেলত না তাস।
সেথায় পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি হতে মোর রূপ থাকত গোপন
ঠিক সেই গোলাপের মতো, যা নির্জন মরুতে ফোটে
কেন যে আমি অভিজাত যুবাদের দলে ভিড়লাম,
এর চেয়ে ভালো, যদি থাকতাম প্রার্থনায় মশগুল
অতি প্রত্যুষেই আমি পেয়েছিলাম অশুভের ঈঙ্গিত।
পরপর তিনবার মোর হাত হতে খসেছিল প্রসাধনী বক্স
চীনামাটির পাত্র করেছিল বিকট আওয়াজ বিনা হাওয়ার তাড়নে
না, মোর প্রিয় কুকুর ছিল নীরব, সাথে পারাবতও করেনি শব্দ কোনো
অলৌকিক সহচরেরা মোর দিয়েছিল আভাস অশুভ কিছু ঘটার

বড়ো দেরি হয়ে গেছে, যেন দুঃস্বপ্নে দেখা কোনো ভয়াল ব্যাপার
দেখো সেই কর্তিত কেশরাশি শেষ অবস্থায়,
যেটুকু আছে তাও ছিন্ন করব আমি,
আমার বেণীর একটি নিয়েছে কেটে
যে দুটো আমার ঘাড়কে রাখত সদা সজ্জিত,
একাকী একটি বেণীর গুচ্ছ বড়োই শ্রীহীন
হয়তবা এটাও পড়বে কাটা;
এটা আছে এখন একটি কাঁচির অপেক্ষায়
ওহে, ব্যারন আবার তুমি কাঁচি হাতে বাড়াও তোমার হাত,
ওহে বেদরদি ব্যারন আমার দুটো বেণী ছাড়া কিছুই দেখোনি তুমি
তাকিয়ে দেখোনি আশেপাশে অন্য কোনো রমণীর কেশ।



No comments:

Post a Comment